বরগুনার তালতলী উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামে পতিত জমিতে লবণ-সহিষ্ণু গম চাষে সাফল্য পাওয়া গেছে। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা। নাম মাত্র খরচে গমের আবাদ করে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি গমের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়েও তারা ভূমিকা রাখছেন। বরিশাল ও খুলনা বিভাগে কমপক্ষে এক লাখ হেক্টর জমিতে শীতে প্রায় তিন লাখ টন গম উৎপাদন সম্ভব। এর বাজার মূল্য প্রায় এক হাজার ৪৪০ কোটি টাকা (৪৮ টাকা কেজি দরে) বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত শনিবার তালতলীর নলবুনিয়া গ্রামে আবাদ করা গম কাটার অনুষ্ঠানে কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা উপকূলীয় এলাকার লবণাক্ত জমিতে গম চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী হওয়ায় আবাদি জমিতে লবণের পরিমাণ খুব বেশি। এ কারণে শুধু আমন ধান চাষ হয়। ডিসেম্বরে আমন কাটার পর জমিতে লবণাক্ততা বেড়ে যায় বলে ফসল ফলানো যায় না। বর্ষা এলে আবার আমন চাষ করেন তারা। এখানকার কৃষি জমি বছরের প্রায় আট মাসই অনাবাদি থাকে। দেশের উপকূলীয় এলাকায় এ ধরনের জমির পরিমাণ প্রায় এক লাখ হেক্টর।
গম চাষি ইউসুফ হাওলাদার বলেন, ‘শুধু আমন আবাদ করতে পারতাম। শুকনোকালে জমিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে অন্য ফসল ফলানো সম্ভব হয় না। গম আবাদের প্রকল্পের লোকজন আমাদের উৎপাদনের পদ্ধতি হাত-কলমে শিখিয়ে দেওয়ায় এ বছর এক বিঘা জমিতে গম চাষ করি। আশা করছি, আট থেকে ১০ মন গম পাবো।’ ‘নামমাত্র খরচে পতিত জমিতে গম উৎপাদন করতে পেরে খুশি,’ যোগ করেন তিনি। গম চাষি ইদ্রিস হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের জমি আমন আবাদের পর প্রায় আট মাস অনাবাদি থাকতো। এখন সেখানে গম চাষ করতে পেরে আমরা লাভবান হচ্ছি। আশা করছি, প্রতি মন গম প্রায় দুই হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবো।’