নড়াইলে সফল কৃষি উদ্যোক্তা শোয়েব আক্তার

নড়াইল পৌরসভার কুড়িগ্রাম এলাকার শোয়েব আক্তার একসময় বন বিভাগে চাকরি করতেন। গাছের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল সবসময়। ২০০৮ সালে বন বিভাগের মালি পদে চাকরি পান। কর্মক্ষেত্র ছিল মেহেরপুর। তিন মাস পর চাকরি ছেড়ে চলে আসেন বাড়িতে। ছয় একর জমিতে গড়ে তোলেন নার্সারি। এর মধ্যে ২ একর ৫০ শতক জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল চাষ শুরু করেন তিনি। কৃষি উদ্যোক্তা শোয়েব আক্তার নিজের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন আরো ১০টি পরিবারের।
শোয়েব আক্তার বলেন, ‘সরকারি চাকরি আমার তেমন ভালো লাগছিল না। তিন মাস পর চাকরি ছেড়ে চলে এসেছি। ২ একর ৫০ শতক জমিতে কুল চাষে আমার প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কুল বিক্রি করে খরচ বাদে ৮-১০ লাখ টাকা লাভ হবে। সরকারি চাকরিতে থাকলে এক বছরে কখনো ৮-১০ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব হতো না। পাশাপাশি আমার এখানে কাজ করে ১০টি পরিবার সংসার চালাচ্ছে। তাদের প্রত্যেকের মাসিক বেতন ১০-১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত।’
বেকার যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হোন।’ শোয়েব আক্তারের কুলখেতে কাজ করেন সোহান হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি মাস শেষে ১৫ হাজার টাকা বেতন পাই।’ আরেক কর্মচারী সবুজ আলী বলেন, ‘আমি খেতে সার-ওষুধ দেয়া ও কুল তোলাসহ অন্যান্য কাজ করি। প্রতি মাসে ১৮ হাজার টাকা বেতন পাই।’ নড়াইল পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুবির কুমার দে বলেন, ‘শোয়েব আক্তার কুল চাষে প্রথমবারই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তার বাগানে যেভাবে ফলন হয়েছে কমপক্ষে ১৩-১৪ লাখ টাকার কুল বিক্রি হবে।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘শোয়েব আক্তারের কুলখেত বেকার যুবকদের অনুপ্রেরণা হতে পারে। স্বল্প খরচে অনেক বেশি লাভ করতে চাইলে কুল চাষের বিকল্প নেই। এক বছরেরও কম সময়ে জমি থেকে কুল তুলে বাজারজাত করা সম্ভব। সদর উপজেলায় এ বছর ৪২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার কুল আবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ কৃষককে সহযোগিতা করে আসছে।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, ‘শিক্ষিত বেকার যুবকরা লেখাপড়া শেষ করে ঘরে বসে না থেকে তারা সহজেই কৃষি উদ্যোক্তা হতে পারে। অল্প পুঁজি এবং কম সময়ে তারা মিশ্র ফলের বাগান করে সহজেই লাভবান হতে পারে।’