মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২২৯ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। এর আগে এসেছেন ১১৫ জন। নতুন করে আরও ১১৪ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে বিজিপিসহ মিয়ানমার সরকারের অন্যান্য বাহিনীর সদস্যও রয়েছেন। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বিজিবি। তাদের থাইংখালি সাইক্লোন সেন্টারে নেওয়া হয়েছে। এদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলে বান্দরবানের এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত হয়েছেন। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাছিনা বেগম (৫২) ওই এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। এছাড়া নিহত রোহিঙ্গা পুরুষের (৫৫) পরিচয় জানা যায়নি।
এর আগে গত রোববার গোলাগুলির সময় নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু এলাকায় বেশ কয়েকটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এতে ওই এলাকার যুধিষ্ঠির ধরের ছেলে প্রবীর ধর নামের একজন আহত হন।
মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। এছাড়াও মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবিকে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, চলমান এ পরিস্থিতি বাংলাদেশ খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এ বিষয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বর্ডারের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী। গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এ সংঘাত বেড়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে মিয়ানমারের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।