সবজি চাষে রংপুরসহ উত্তরের অর্থনীতিতে কৃষকের ঘরে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি যোগ হয়েছে। অনুকূল পরিবেশ থাকায় এই অঞ্চলের বৃহৎ, ক্ষুদ্র, বরগা ও প্রান্তিক চাষীরা খরিপ-১, খরিপ-২ এবং রবি মৌসুমে শাক সবজির আবাদ করেছে ১ লাখ ৮০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় কৃষি বিভাগ পতিত জমিতে শাক সবজি উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়ায় কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের ভাল দাম পেয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় রবি ও খরিপ মৌসুমে ১ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমি থেকে প্রায় ৩৬ লাখ মেট্রিক টন করলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পুই শাক, মুলা, টমেটো, কুমড়াসহ বিভিন্ন শাক সবজি শাকসবজি কৃষকদের ঘরে উঠেছে। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন হয়েছে ২০ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি শাক সবজির সর্বনিম্ন ৩০ টাকা হলে প্রতি মেট্রিক টন বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার টাকায়। সেই হিসাবে দুই মৌসুমে ৩৬ লাখ মেট্রিক টন শাক সবজির মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকার ওপর। তবে মধ্যস্বত্ব ভোগীরা কৃষকদের লাভের একটি অংশ নিজেদের পকেটস্থ করেছে। রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার কৃষক গৌরাঙ্গ রায়, পীরগাছার কল্যানি ইউনিয়নের চাষি নজরুল ইসলাম বুলবুল, কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের আফজাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, তারা এখন সকলেই স্বাবলম্বী। এখন তাদের অনেকেরই শাক সবজি বিক্রির জন্য হাট বাজারে যেতে হয় না। ব্যাপারীরা বাড়ির আঙ্গিনা থেকে শাক সবজি ক্রয় করে নিয়ে যান। এসব ব্যাপারীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে সবজি সরবরাহ করে। রবি মৌসুমে মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালং শাক, পুই শাকসহ অন্যান্য সবজি আবাদ করে ভাল লাভ পাচ্ছেন কৃষকরা। এখন উত্তরাঞ্চলের মহাসড়কগুলোর পাশে দাঁড়ালে দেখা যায় বিভিন্ন হাট বাজারের পাশে ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে সবজি ক্রয়ের জন্য। রাত থেকে ভোর হতে হতে এসব ট্রাক সবজি নিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে চলে যাচ্ছে।
কৃষকরা জানান, ১ একর জমিতে করলা আবাদ করে খরচ বাদ দিয়ে লাভ করেছেন প্রায় লাখ টাকা। অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। তাদের মতো হাজার হাজার ক্ষুদ্র চাষি সবজি আবাদ করে সংসারে সাচ্ছল্য এনেছেন। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকার সবজি চাষিদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করায় উত্তরাঞ্চলের সবজি চাষিরা এই ভাল দাম পেয়েছেন। এছাড়া সরকারের পুষ্টি বাগান কর্মসূচির সবজি চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।