মালয়েশিয়ায় কলিং ভিসায় গিয়ে কাজ ও খাবার না পাওয়া ২১ বাংলাদেশির কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নিচ্ছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। ২১ বাংলাদেশির নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে ব্যক্তি পাচার বিরোধী এবং অভিবাসী আইন (এটিআইপিএসওএম) ২০০৭ (অ্যাক্ট ৬৭০) অনুযায়ী তদন্ত চলছে। এছাড়া ইতোমধ্যে যেসব নিয়োগকর্তা শ্রমিক এনে কাজ দিতে পারছে না তদন্তে অপরাধের প্রমান পাওয়া গেলে তাদের লাইসেন্স বাতিল সহ দেশটির প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ ৩০ বছর অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতেপারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১০ জানুয়ারি),ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের (জেআইএম) মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। পরিচালক বলেছেন, তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে নিয়োগকর্তার ৩০ বছর কারাদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড হতে পারে এবং মানব পাচারের আরও গুরুতর অপরাধে বেত্রাঘাতও দেওয়া হবে। তবে শাস্তির বিধানের কথা বলে আসলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ খুব একটা দেখা যায় না। যার কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়।
জনগণের অভিযোগ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুত্রজায়ার অ্যান্টি-ট্রাফিকিং অ্যান্ড অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং বিভাগের অপারেশনাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, সোমবার (৮ জানুয়ারি) সেলাঙ্গর রাজ্যের, বন্দরনগরী কেলাং থেকে, কলিং ভিসায় গিয়ে কাজ না পাওয়া ২১ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত ২১ বাংলাদেশির বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।
শোষণের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা ওই ২১ বাংলাদেশি শ্রমিকদের সবার কাছে বৈধ ওয়ার্ক পারমিট, ট্রাভেল ডকুমেন্টস ছিল। তবে তাদের সবার পাসপোর্ট নিয়োগকর্তার কাছে জমা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণে ২১ বাংলাদেশী শ্রমিককে পুত্রাজায়ায় ইমিগ্রেশন সদর দফতরে তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
তবে ওই ২১ বাংলাদেশী শ্রমিকদের নাম পরিচয় এবং কোন কোম্পানির অধীনে কাজ করতে মালয়েশিয়ায় এসেছেন তা প্রকাশ করেনি অভিবাসন বিভাগ। শ্রমিকদের অভিযোগ, তারা কলিং ভিসায় মালয়েশিয়া আসার ৬ মাস গেলেও এখন পর্যন্ত তাদের কোন কাজ দেয়া হয়নি। বেতন, খাবার খরচসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। প্রাথমিক তদন্তেে এই অভিযোগ গুলোর সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক।
নিয়োগকর্তা দ্বারা বিদেশি শ্রমিকরা শোষিত বা নির্যাতিত হলে এবং জোর করে শ্রম আদায় করলে এ বিষয়ে অভিবাসন বিভাগকে তথ্য জানাতে দেশের জনসাধারনকে পরামর্শ দিয়েছেন, ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ। প্রয়োজনে ০৩-৮০০০ ৮০০০ নম্বরে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে। জনসাধারনের তথ্যের ভিওিতে, শোষণের শিকার বিদেশি কমীদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।