প্রবাস

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবাসী  দিবস পালন

মালয়েশিয়াপ্রবাসীর কল্যাণ মর্যাদা আমাদের অঙ্গীকার,  স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় তারাও  অংশীদার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে  ব্যাপক উৎসাহ- উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতীয়  প্রবাসী দিবস -২০২৩  পালন করেছে  মালয়েশিয়াস্হ বাংলাদেশ  হাইকমিশন। শনিবার  (৩০ ডিসেম্বর) প্রবাসীদের  অবদানের স্বীকৃতি এবং দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে তাদের অধিকতর সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে   কুয়ালালামপুরের জি টাওয়ার-এ  দিনব্যাপী   আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র  প্রদর্শন,  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং র‍্যাফেল ড্র   এর  আয়োজন করা হয়।  অনুষ্ঠানে   মালয়েশিয়ার অভিবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি,   প্রবাসী  বাংলাদেশী বিভিন্ন পেশাজীবী, শ্রমিক ,   বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ,  বিভিন্ন  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের   শিক্ষার্থী,  বাংলাদেশ হাইকমিশনের  কর্মকর্তা- কর্মচারীসহ  বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ শামীম আহসান । আলোচনায় বক্তব্য রাখেন হাইকমিশনের কাউন্সিলের ( শ্রম) সৈয়দ  শরিফুল ইসলাম,  মালয়েশিয়ার  ফরেন ওয়ার্কার্স ডিভিশন এর প্রধান হারিরি বিন হারুন,  মালয়েশিয়ার হিরু মার্কেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাডাম চ্যাং, এনবিএল  মানি ট্রান্সফার, মালয়েশিয়ার  প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা  মো.  আলী হায়দার  মর্তুজা , মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতা মকবুল হোসেন মুকুল এবং এসটিজি কোম্পানির কর্মী আব্দুর রহিম  ।
অনুষ্ঠানে এ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি,  প্রধানমন্ত্রী,  পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক  কর্মসংস্থান  মন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।  এরপর এ দিবস উপলক্ষে  বিশেষ   প্রামাণ্যচিত্র এবং প্রবাসীদের কল্যাণে  হাইকমিশনের কার্যক্রমের  উপর  নির্মিত  প্রামাণ্যচিত্রও   প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনায়   মালয়েশিয়ার   ফরেন ওয়ার্কার্স ডিভিশন এর প্রধান হারিরি বিন হারুন বলেন,   বাংলাদেশী কর্মীরা মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা রাখছে।  বাংলাদেশী কর্মীদের সুরক্ষায় মালয়েশিয়া কাজ করছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন  কর্মীদের  বীমা সুবিধা নিশ্চিত করতে হাইকমিশনের সাথে কাজ করছে মালয়েশিয়া ফরেন ওয়ার্কার্স ডিভিশন। মালয়েশিয়ার হিরু মার্কেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চ্যাং বাংলাদেশের কর্মীদের  ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের কর্মীরা অনেক পরিশ্রমী এবং সৎ।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের  হাইকমিশনার মোঃ শামীম আহসান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং   অভিবাস ও বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন উদ্যোগ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।  তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রবাসবান্ধব নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রবাসবান্ধব নীতি বাস্তবায়নে দূতাবাস আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
প্রবাসী বাংলাদেশীরা স্বাগতিক দেশ মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের  উন্নয়নে  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।  মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অষ্টম বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ।  দুই দেশের বাণিজ্য প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দিন দিন সুদৃঢ় হচ্ছে। বাংলাদেশের শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সুরক্ষা নিশ্চিতে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়ার সরকার এবং অভিবাসী সংক্রান্ত বিভিন্ন দপ্তর এর সাথে একযোগে কাজ করছে। হাইকমিশনার প্রবাসীদের বৈধ পথে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, বৈধ পথে দেশে অর্থ প্রেরণ করা হলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। বাংলাদেশ শুধু কর্মী প্রেরণকারী দেশ নয়। বুদ্ধিবৃত্তিক বিভিন্ন সেক্টরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পেশাজীবীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন।
প্রবাসী দিবস উপলক্ষে   মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসীদের   বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৮ জনকে  হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
পেশাজীবীদের মধ্যে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন, মালয়েশিয়ার কেলান্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার ড.  লাইলা নাহার,  সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সাইদুর রহমান , পেরদানা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর  ড. মো. নাজমুল হাসান মাজিজ, ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী   মিশায়ার রায়হান  চৌধুরী, মালয়েশিয়ার হাইকোর্টের আইনজীবী  ব্যারিস্টার সেলিম ইশফাক আলী,  ইউ কে এম ইউনিভার্সিটির প্রফেসর মো. তরিকুল ইসলাম , সানওয়ে ইউনিভার্সিটির প্রফেসর   এম এ হান্নান , ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর  এ কে আহসানুল হক এবং শিক্ষার্থী  মো. ফাইজাল ।
প্রফেশনাল ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত  শীর্ষ রেমিটেন্স প্রেরণকারী হলেন আব্দুস সালাম , মো. জাহিদুল ইসলাম এবং ড. সাইদুর রহমান। ব্যাবসায়িক ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত শীর্ষ রেমিটেন্স প্রেরণকারী হলেন  মো. ওয়াহিদুর রহমান, মোঃ বোরহানউদ্দিন এবং মো. জাকির হোসেন প্রধান। সাধারণ কর্মী ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন  রাজ, মো. রাশেদুল এবং মাহাবুব আজম । আলোচনা  শেষে প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং  র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button