হঠাৎ কানে তালা লাগলে কী করবেন
কানের পর্দা কানকে বহিঃকর্ণ ও মধ্যকর্ণে বিভক্ত করে। তালা লাগা রোগে কানের পর্দার ভেতরের দিকে প্রদাহ হতে পারে, যাকে সংক্ষেপে বলে ওএমই (ওটিটিস মিডিয়া উইথ ইফিউশন)। যদিও বিষয়টি ওষুধের মাধ্যমে কমে যায়, তবে কানের এ সমস্যা একেবারে হালকা নয়। মধ্যকর্ণের প্রদাহ বিভিন্ন রূপ নিয়ে প্রকাশ পেতে পারে। কখনও মধ্যকর্ণে সামান্য তরল পদার্থের উপস্থিতি, কখনও পুঁজ সৃষ্টি, আবার মধ্যকর্ণে পুঁজ হলে কানের পর্দা হয়ে সেই পুঁজ কান দিয়ে বেরিয়ে আসার মাধ্যমেও এ রোগের প্রকাশ ঘটতে পারে
কেন কানে তালা লাগে?
অডিটরি টিউব, যা নাকের সঙ্গে গলা ও কানের সংযোগ স্থাপন করে। অডিটরি টিউব মধ্যকর্ণ ও আবহাওয়ার বায়ুচাপের ভারসাম্য রক্ষা করে। কোনো কারণে এ টিউব বন্ধ হয়ে গেলে মধ্যকর্ণে পানি জমে প্রদাহ হতে পারে। সাধারণত হাঁচি, সর্দি, কাশি বা শীতকালে ঠান্ডা লাগার কারণে কানের সঙ্গে নাক ও গলার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকারী টিউবটি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে সাময়িক বন্ধ থাকে। ফলে মধ্যকর্ণের সঙ্গে বাইরের পরিবেশের যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটে। শ্বাসনালির ওপরের অংশে জীবাণু সংক্রমণ বা প্রদাহ আপনার কানের সমস্যার কারণ হতে পারে।
কাদের এ সমস্যা হতে পারে?
স্কুলগামী বাচ্চাদের এ সমস্যা বেশি দেখা গেলেও যে কেউ এতে আক্রান্ত হতে পারেন। যেসব বাচ্চার নাক ডাকার অভ্যাস আছে, তাদের মধ্যকর্ণে পানি জমা হতে পারে। এ রোগের উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে– ১. ঘন ঘন ঊর্ধ্ব শ্বাসনালির সংক্রমণ (ইউআরটিআই), যেমন– সর্দি, কাশি, নাক বন্ধ; ২. প্রায়ই অ্যালার্জিজনিত নাকের প্রদাহ বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস; ৩. ক্রনিক টনসিলের ইনফেকশন; ৪. শিশুদের ক্ষেত্রে নাকের পেছনে অ্যাডিনয়েড নামক লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া; ৫. নাকের হাড় বাঁকা বা ক্রনিক সাইনোসাইটিসের সমস্যা; ৬. শীতকালে ভাইরাল ইনফেকশন এবং ৭. নাকের পেছনে ন্যাসোফ্যারিংস নামক স্থানে কোনো টিউমার হলে।
লক্ষণ কী?
মধ্যকর্ণে পানি জমা হয়ে প্রদাহ হলে সর্দি-কাশির সঙ্গে হঠাৎ কান বন্ধ হয়ে যায়। অনেকে একে কানে তালা দেওয়া বলে অভিহিত করেন।
হঠাৎ করেই কানে বেশ ব্যথা মনে হয়, কানের মধ্যে ফড়ফড় করে এবং ভোঁ ভোঁ শব্দ হয়, কানে কম শোনা যায়, ইনফেকশন তীব্র হলে কানের পর্দা ফুটো হয়ে কান বেয়ে রক্তমিশ্রিত পানির মতো কিংবা পুঁজ পড়ে। এ রকম সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত একজন নাক-কান-গলা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।