চলতি বছরের অক্টোবরে হঠাৎ করেই আলুর বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার টন আলু এসেছে দেশের বাজারে। এদিকে আমদানি বন্ধের খবরে আবারো বাড়তির দিকে পণ্যটির বাজার। এমন অবস্থায় আমদানির অনুমতি আরো ১৫ দিন বাড়ানোর দাবি তুলেছেন আমিদানিকারকরা। তবে এরই মধ্যে দেশীয় আলু বাজারে উঠতে শুরু করায় নতুন করে আমদানির মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তথ্য বলছে, আলুর দাম কেজিপ্রতি ৬০-৭০ টাকায় উঠে গেলে গত ৩০ অক্টোবর সরকার এক মাসের জন্য আলু আমদানির অনুমতি দেয়। এর ধারাবাহিকতায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গত ২ নভেম্বর থেকে দেশের বাজারে প্রবেশ করতে শুরু করে ভারতীয় আলু। দামও নেমে আসে ৪০-৪৫ টাকার ঘরে। তবে গত ৩০ নভেম্বর আমদানির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তখনো বাজারে দেশীয় আলু পুরোদমে উঠতে শুরু না করায় সীমিত সরবরাহের কারণে আবারো বাড়তে শুরু করে পণ্যটির দাম। এ সময় আমদানিকারকরাও আরো ১৫ দিন সময় বাড়ানোর আবেদন জানালে সরকার ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা মঞ্জুর করে। সব মিলিয়ে ২ নভেম্বরে থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় মাস আলু আমদানি অব্যাহত ছিল।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্দর দিয়ে নানা জাতের ৩৪ হাজার ৯৯৪ টন আলু আমদানি হয়েছে, যার আমদানি মূল্য ছিল ৫৮ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এদিকে আমদানির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে আলু আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। এতে করে বিপাকে পড়েছেন পাইকাররা। দাম স্থিতিশীল রাখতে আরো ১৫ দিন আলু আমদানির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি আমদানিকারকদের। তবে আরেক দফা আমদানির অনুমতি দিলে স্থানীয় আলু চাষীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বন্দর দিয়ে পুরনো লাল বর্ণের কাটিনাল জাতের আলু, সাদা আলু ও নতুন জাতের আলু আমদানি হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ থাকলেও ওইদিন শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় গত বৃহস্পতিবারই ছিল আলু আমদানির শেষদিন। আমদানি বন্ধের খবরে ওইদিন পাইকারি পর্যায়ে কেজিপ্রতি ৩৩-৩৪ থেকে ২-৩ টাকা বেড়ে ৩৫-৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে গতকাল হিলিতে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা বেড়ে গেছে। অনেকেই বাড়তি দাম পাওয়ার আশায় আমদানীকৃত আলু মজুদ করে রেখেছেন। বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল বন্দরে প্রতি কেজি কাটিনাল জাতের পুরনো আলু পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৪১-৪২ টাকা দরে। আর সাদা বর্ণের গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৭ টাকা কেজি দরে।