প্রযুক্তি

র‍্যানোকোডারের আয়োজনে পালিত হল আওয়ার অব কোড

ranjeetরংপুরের পীরগঞ্জে ১২ ডিসেম্বর ঘটা করে আয়োজিত হল আওয়ার অব কোড উইথ র‍্যানোকোডার। এবছর বাংলাদেশে আওয়ার অব কোডের এটিই ছিল স্পেশাল ইভেন্ট। এনিবডি ক্যান লার্ন অর্থাৎ যে কেউ শিখতে পারে এই শ্লোগান নিয়ে ২০১৩ সালে প্রোগ্রামিং শেখানোর আওয়ার অব কোড নামের এ উদ্যোগ নেয় কোড ডট ওআরজি (www.code.org)।  কম্পিউটারের ভাষাকে জনপ্রিয় করতে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ‘কম্পিউটার সাইন্স এডুকেশন উইক’ এ ‘আওয়ার অব কোড’ পালিত হয়। যেখানে যেকোন বয়সের এবং যেকোন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা এক ঘন্টার কোডিং কর্মশালায় অংশ নিতে পারে।
কম্পিউটার সর্বত্র রয়েছে, বিশ্বের প্রতিটি ক্ষেত্রকে পরিবর্তন করছে। কিন্তু সমস্ত উচ্চ বিদ্যালয় মাত্র ৫১% কম্পিউটার সায়েন্স অফার করে। পীরগঞ্জে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান র‍্যানোকোডার এই কর্মশালার আয়োজন করে। র‍্যানোকোডার (RANOCODER) প্রতি বছর ভার্চুয়ালি #HourOfCode আয়োজন করে থাকলেও এবছর স্পেশাল ইভেন্টের মাধ্যমে সশরীরে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংকে জনপ্রিয় করতে পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদে আওয়ার অব কোডের আয়োজন করেছিল। যেখানে পীরগঞ্জের ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল।
এ বিষয়ে র‍্যানোকোডারের চেয়ারম্যান এবং আওয়ার অব কোডের আয়োজক রণজিৎ কুমার মহন্ত বলেন, “বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের হাতে স্মার্টফোন, তাঁরা  ফেসবুক চালাচ্ছে, গেমস খেলছে, মুভি দেখছে, নাটক দেখছে, টিকটক দেখছে কিংবা রিলস/শর্টস বানাচ্ছে। যারা কম্পিউটার চালাতে পারে তারাও কম্পিউটিং বাদে সবই করে প্রায়! কিন্তু কম্পিউটারের জন্মই হয়েছিল কম্পিউটিংয়ের জন্য। স্কুল-কলেজে যে প্রোগ্রামিং বিষয়ে পড়ানো হয় সেটা তারা শুধুমাত্র পরীক্ষায় পাশের জন্যই শিখে থাকে। মফস্বলের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে কম্পিউার ল্যাব থাকে না। থাকলেও ব্যবহার হয় না। ফলে কোডিংয়ের যে মজা সেটা উপভোগ করতে পারে না কিংবা এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারে না। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল যে সবার মাঝে প্রোগ্রামিংয়ের মজাটা ছড়িয়ে দেওয়া। ওরা গেমসে আশক্ত না হয়ে একটা গেমস কীভাবে বানায় সেটি শিখুক, ফেসবুক, ইউটিউব কী দিয়ে তৈরি বা কীভাবে কাজ করে সেটি জানুক।”
ইভেন্টে দুটি অংশ ছিল। ১ম ধাপে কম্পিউটিং, প্রোগ্রামিং, কোডিং এবং এআই নিয়ে আলোচনা এবং ২য় ধাপে এক ঘন্টার কোডিং কর্মশালা। কর্মশালার উদ্বোধন করেন সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট’স ফোরামের এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট ও এটিএন বাংলার কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স এডিটর  কেরামত উল্লাহ বিপ্লব।
শ্রেষ্ঠ শিক্ষক আমিরুজ্জামান সুমনের উপস্থাপনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মন্ডল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হাসান, উপজেলা মহিল ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা আলম রিনা, পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল ইসলাম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার আসফাকুল ইসলাম। বক্তারা প্রোগ্রামিংকে উৎসাহিত করতে বক্তব্য রাখেন।
আয়োজনে বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং অংশগ্রহণকারীদের কর্মশালায় সহযোগিতা করেন আয়োজক টিমের আনোয়ার, ইভান, ত্বরিক, রাজিব এবং মিথুন। রণজিৎ জানান, “অনলাইনে hourofcode.ranocoder.com এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের আহ্বান করলে এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করে এবং প্রায় ৩ শতাধিক উৎসাহী শিক্ষার্থী নিবন্ধ করে। উপজেলা পরিষদ আমাদের দুটো ল্যাব ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছিল।” অংশগ্রহণকারী শ্রাবণী এবং পূজা জানায়, “আমরা কখনো কম্পিউটার ব্যবহার করি নাই। অথচ ল্যাপটপ ব্যবহার করে Dance with AI শিখলাম যেখানে আমরা ৪ লাইন করে কোড লিখেছিলাম। উপভোগ করেছি প্রচুর।” ইভেন্টে স্পন্সর হিসেবে ছিলো, রাজনুর টেলিকম, সনেট অনলাইন, শফিক কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, এটিএম সফট এবং গ্লোবাল আইটি এজেন্সি। কর্মশালা শেষে প্রত্যেককে আওয়ার অব কোডের সার্টিফিকেট এবং আকর্ষণীয় উপহার প্রদান করা হয়।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button