ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির আয়েশা আবেদ লাইব্রেরি এবং ওপেন সোসাইটি নেটওয়ার্ক (ওএসইউএন) যৌথভাবে ওপেন অ্যাকসেস উইক ২০২৩ উদযাপন করছে। কৃতিত্বপূর্ণ একাডেমিক গবেষণা এবং শিক্ষা উপকরণে ওপেন অ্যাকসেস ধারণার সমর্থন এবং প্রচার করার উদ্দেশ্যে ২৭ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর ২০২৩ থেকে এই ওপেন অ্যাকসেস উইক উদযাপন করা হয়েছে। এই ওপেন অ্যাকসেস সপ্তাহের লক্ষ্য ছিল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির গবেষণা অগ্রযাত্রায় গবেষণাপত্রে ওপেন অ্যাকসেস সুবিধা সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া এবং শিক্ষক, গবেষক এবং শিক্ষার্থীদের তাদের গবেষণাকর্ম সর্বজনীনভাবে উন্মুক্ত করতে উৎসাহিত করা।” এই বছর ইন্টারন্যাশনাল ওপেন অ্যাকসেস উইকের প্রতিপ্রাদ্য হলো “কমিউনিটি ওভার কমার্শিয়ালাইজেশন”।
ওপেন অ্যাকসেস উইক ২০২৩ উদযাপন করতে এলসেভিয়ারের ড. নিতিন ঘোষাল এর সঞ্চালনায় “এক্সপ্লোরিং দ্য ইমপ্যাক্ট অফ ওপেন অ্যাকসেস পাবলিশিং অন রিসার্চ ডিজিবিলিটি অ্যান্ড স্কলারলি কমিউনিকেশন” শীর্ষক ওয়েবিনারসহ একাধিক কার্যক্রমের আয়োজন করে আয়েশা আবেদ লাইব্রেরি। এর মধ্যে অন্যতম হলো ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য “ওপেন অ্যাকসেস পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড”। স্কোপাস ইনডেক্সড কিউ ১ ক্যাটাগরির গোল্ড ওপেন অ্যাকসেস জার্নাল, ই লাইফ এ “হেটারোজেনাস কন্ট্রিবিউশন্স অফ চেঞ্জেস ইন দ্য পপুলেশন ডিস্ট্রিবিউশন অফ বডি ম্যাস ইনডেক্স টু চেঞ্জেস ইন ওবেসিটি অ্যান্ড আন্ডারওয়েট” শীর্ষক গবেষণাপত্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সাইটেশনের জন্য ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের প্রফেসর ড. কাওসার আফসানাকে পুরস্কৃত করেছে আয়েশা আবেদ লাইব্রেরি।
আরেকটি ক্যাটাগরি হলো ডিস্পেস গুগল অ্যানালাইটিকস স্ট্যাটিস্টিক্স এর তথ্যানুযায়ী সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পঠিত আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট থিসিস এবং ইন্টার্নশিপ রিপোর্টের জন্য পুরস্কার প্রদান। জানুয়ারি ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২২ এর মধ্যে সম্পন্নকৃত শিক্ষার্থীদের এসব গবেষণাকর্ম ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউশনাল রিপোজিটরিতে (dspace.bracu.ac.bd) সংরক্ষিত ছিল।
স্নাতক পর্যায়ে ‘ডিসপেয়ার ইন এশিয়ান লিটারেচার: এক্সপ্লোরিং ডাজাই ওসামু’স ‘নো লংগার হিউম্যান’ ইন দ্য লাইট অফ এক্সিটেনশিয়ালিজম, এবসার্ডিজম অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল ডিজাবিলিটি থিউরি” শীর্ষক থিসিসটি সবচেয়ে বেশিবার পঠিত থিসিসের স্বীকৃতিস্বরুপ ডিপার্টমেন্ট অফ ইংলিশ অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ এর হালিমা হাসিন তোফাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ে “ইফেক্ট অফ মাইক্রোফিনান্স অন পোভার্টি রিডাকশন অ্যান্ড ইকোনমিক গ্রোথ ইন ডেভেলপিং ইকোনমিস” শীর্ষক থিসিসটি সবচেয়ে বেশি পঠিত থিসিসের জন্য ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের লিয়াকত আলী খানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
“রেভোলুশিওনাইজিং ওয়ার্ক ফর্ম হোম অ্যান্ড দ্য কন্ট্রিবিউশন অফ হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ইন টাইমস অফ কোভিড-১৯” শীর্ষক সবচেয়ে বেশি পঠিত ইন্টার্নশিপ রিপোর্টের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের নাবিহা আজাদ নুর।
ওপেন অ্যাকসেস উইক উপলক্ষ্যে আয়োজিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রকাশনা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর এবং ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের ডিন ড. লরা জে রেইখেনবাক এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির রেজিস্টার ড. ডেভিড ডাউল্যান্ড। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আয়েশা আবেদ লাইব্রেরির ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরিয়ান হাসিনা আফরোজ।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে “ওপেন ইনিশিয়েটিভস অ্যাট ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি: আনলকিং দ্য ডোর’ শীর্ষক একটি প্রেজেন্টেশনে আয়েশা আবেদ লাইব্রেরির ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরিয়ান হাসিনা আফরোজ বলেন, “ধারাবাহিকভাবে আমাদের লাইব্রেরি কার্যক্রমের প্রতিটি পদক্ষেপ আরও উন্মুক্ত হয়ে উঠছে। আমরা অনেকগুলো বিষয়ে নিয়ে কাজ করছি, যেমন তথ্য সহজলভ্য করা, উন্মুক্ত ডেটা অন্তর্ভুক্তকরণ, ওপেন স্কলারশিপ প্রচার, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উন্মুক্ত শিক্ষার উপকরণসমূহ ব্যবহার করা।”
ওপেন অ্যাকসেস উইক ২০২৩ উদযাপনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আয়েশা আবেদ লাইব্রেরির প্রশংসা করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর এবং ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ। তিনি বলেন, “ওপেন সোর্স অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ বিশ্বকে অন্বেষণ করার নতুন সুযোগ খুঁজে পেয়েছে।” এগুলো বিনামূল্যে পাওয়া যায়, এসব অ্যাপ্লিকেশন শক্তিশালী এবং এগুলোকে ইচ্ছানুযায়ী পরিবর্তন করা যায়।” তিনি গবেষকদের স্বীকৃত ওপেন অ্যাক্সেস জার্নালসমূহে তাদের প্রকাশনা প্রকাশ করার অনুরোধ করেন এবং সেই সাথে নামধারী এবং মুনাফালোভী জার্নাল থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন।
ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির গবেষণা ও প্রকাশনার অগ্রগতিতে সহায়তা করতে পারায় অত্যন্ত গর্বিত বলে মন্তব্য করেন অনুষদের ডিন ড. লরা জে রেইখেনবাক। তিনি বলেন, “গবেষণার অগ্রগতির জন্য এর ফলাফলগুলিকে অন্যদের নিকট উন্মুক্ত করা প্রয়োজন। বিশ্বব্যাপী একসাথে কাজ করার জন্য স্কুল, ইনস্টিটিউট এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য জ্ঞানের উন্মুক্ত আদান-প্রদানকে উৎসাহিত করা গুরুত্বপূর্ণ।” পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে আয়েশা আবেদ লাইব্রেরির বিভিন্ন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির রেজিস্টার ড. ডেভিড ডাউল্যান্ড।