পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর গতকাল শনিবার পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির মহাসমাবেশ। এরপর বিএনপি-জামায়াত আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) দেশজুড়ে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। এতে করে রাজধানীতে বাস চললেও তার সংখ্যা ছিল খুবই কম। রাস্তায় মানুষও ছিল কম। ব্যক্তিগত গাড়িও খুব একটা চোখে পড়েনি। অন্যদিকে হরতালের সমর্থনে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদেরও সড়কে অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগ ও প্রেসক্লাবের মোড় হয়ে নয়াপল্টন পর্যন্ত আজ সকাল ৯টা থেকে ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
রাজধানীতে গণপরিবহণের স্বাভাবিক চলাচল না থাকায় অনেক কর্মজীবী অফিসে আসতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। রাজধানীর মিরপুর-১০, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া থেকে কারওয়ান বাজার বা ফার্মগেটগামী অনেক যাত্রীকে বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশা বা শেয়ারে সিএনজি ভাড়া করে আসতে দেখা গেছে। কাজীপাড়া থেকে কারওয়ানবাজার আসার পথে যানবাহন সংকটে ভোগান্তিতে পড়েন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী অর্জুন কুমার দাস। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘হরতালে বাসের দেখা নেই বললেই চলে। কারওয়ান বাজার যাব, কিন্তু সড়কে সিএনজি অটোরিকশা আর রিকশা ছাড়া কিছু পাচ্ছিলাম না। তবে, অটোরিকশা ভাড়া চাইল ৩০০ টাকা। পরে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে বিহঙ্গ নামের একটি বাসে চড়ে কারওয়ান বাজার এসেছি।’
রাজধানীর শাহবাগ থেকে উত্তরা যাবেন শরিফুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। সেখানে ২৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে তিনি একটি বিআরটিসির বাস পান। বাসে ওঠার আগে বলছিলেন, ‘ভয়ে ভয়ে বের হয়েছি রাস্তায়। কোনো উপায় না থাকায় বের হতে বাধ্য হয়েছি। বাসের জন্য অনেক সময় অপেক্ষায় আছি। কখন বাস আসে দেখি। আজকে রিকশা ভাড়া অন্যদিনের তুলনায় বেশি চাচ্ছে। কী যে ভোগান্তি!’
সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে পল্টন পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় মানুষ অনেক কম। এছাড়া যাত্রীবাহী বাস কম চলতে দেখা গেছে। সড়কে সিএনজি অটোরিকশা আর রিকশা বেশি দেখা গেছে। এতে যেসব মানুষ বাইরে বের হয়েছেন, তাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।
যদিও রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চালকদের দাবি, সড়কে মানুষ কম। ফলে, বসে থাকতে হচ্ছে তাদের। সেজন্য দু-পাঁচ টাকা বেশি চাইছেন। রাফি নামের এক সিএনজি অটোরিকশা চালক বলেন, ‘ভয়ে ভয়ে রাস্তায় বের হয়েছি। আবার বাস নাই। আমরা যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছি, সেটাও যাত্রীদের বিবেচনা করা উচিত।’