ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আজ রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় আসছেন। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে তাঁর। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। জানা গেছে, ম্যাক্রোঁ ঢাকায় পৌঁছালে লাল গালিচায় স্বাগত জানানো হবে। নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে ঢাকায় আসবেন তিনি। তাঁর সঙ্গে থাকবেন ইউরোপ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে জি-২০ সফর শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় দেশে ফেরার কথা রয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন তিনি।’ আজ রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় অতিথির সম্মানে প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন ম্যাক্রোঁ। আগামীকাল সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি শীর্ষ বৈঠক করবেন। এ সময়ে কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই এবং একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া সোমবার সকালে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ম্যাক্রোঁ। ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাস বলেছে, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে ব্যবসা সম্প্রসারণে উভয় পক্ষের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ দেখে আমরা রোমাঞ্চিত।’
ফ্রান্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর এই সফর দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ হবে। বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে মোট বাণিজ্য ২১০ মিলিয়ন ইউরো থেকে চার দশমিক নয় বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত হয়েছে এবং ফ্রান্স রপ্তানির ক্ষেত্রে পঞ্চম দেশ। ফরাসি কোম্পানিগুলো এখন প্রকৌশল, জ্বালানি, মহাকাশ ও পানি খাতসহ বিভিন্ন খাতের সঙ্গে জড়িত। ১৯৯০ সালের শুরু থেকে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সরকার আন্তরিকভাবে আশা করছে—ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
ফ্রান্স এই সফরকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে গভীর করার সুযোগ হিসেবে দেখছে। ফরাসি সরকার গত সোমবার এই সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। একইসঙ্গে তারা বলেছে, ‘বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেটি দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে এবং অংশীদারত্বে বৈচিত্র্য আনতে চায়। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দারুণ একতা দেখিয়ে থাকে, বিশেষ করে প্যারিস এজেন্ডা ফর পিপলস অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটের কাঠামোয়। যা বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করবে।’