কৃষিজেলার খবরহাইলাইটস

বগুড়ায় আমন চাষে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

26বগুড়ায় আমন চাষে সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। জেলার মাঠে মাঠে এখন আমনের সমারাহ। মাঠে আমন ধানের চারা নয় সোনালী স্বপ্নই যেন বুনছেন কৃষকরা। জমির বুকে লাঙ্গল চালিয়ে ধান নামের সোনা ফলান তারা। ইতিমধ্যে বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আমন ধানের চারা রোপণ শেষ হয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় এখনও ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে।  অনুকূল আবহাওয়া, ফসলের মাঠে কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, সময়মতো সার, কীটনাশক প্রয়োগের কারনে আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষক ও বগুড়া কৃষি বিভাগ।

জানা যায়, শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে ভাদ্র মাসের মধ্যে কৃষকরা আমনের চারা রোপণ করে থাকেন। অধিক বৃষ্টির কারণে আমন ধানের চারা রোপণের এটাই সব থেকে মোক্ষম সময়। কিন্তু এবার শ্রাবণের শুরুতে অঝোরে ঝরেনি বৃষ্টিধারা। কয়েক দিন বৃষ্টি না থাকায় মাঠ ঘাট যেমন শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছিল তেমনি মলিন ছিল কৃষকের মুখের হাসি। আমনের এই নিশ্চিত ফসল পেতে প্রকৃতিই যে ভরসা। জেলার অনেক কৃষকরা বৃষ্টি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় ছিলেন। অনেক এলাকায় সেচ মেশিনের পানি দিয়ে আমন ধানের চারা রোপণ করেছেন। অবশেষে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহালেও যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে বগুড়ার কৃষক। বৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথে মাঠে মাঠে আমনের চারা রোপণের ধুম পড়ে যায়। এখন নিবিড় পরিচর্যা ও সময়মতো সার প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। সোনালি ধান ফলানোর জন্য মাঠে নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কৃষক। তাঁদের নিবিড় পরিচর্যায় আশানুরূপভাবে বেড়ে উঠছে আমন ধান।

বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ, শেরপুর, নন্দীগ্রাম উপজেলা সবচেয়ে বেশি আমন ধানের আবাদ হয়ে থাকে। এছাড়াও জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, শাজাহাপুর, আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া উপজেলায় আমন চাষ করে কৃষকরা। কৃষি অফিস বলছেন, এ বছর আমন ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও বড় ধরণের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের উৎপাদনও অনেক ভাল হবে। সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় ধানের চারাগুলো বেড়ে উঠা শুরু হয়েছে।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হযেছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৩৪ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ২৫০ হেক্টর। বাকি ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন রোপণ চলমান রয়েছে। আশা করা হচ্ছে আর কিছুদিনের মধ্যে শেষ হবে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হবে। গত বছরে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। বন্যায় ক্ষতি বাদ দিয়ে কর্তন হয়েছিল ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৮ হেক্টর জমি। বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ, শেরপুর, নন্দীগ্রাম উপজেলা সবচেয়ে বেশি আমন ধানের আবাদ হয়ে থাকে। সোনাতলা উপজেলার হুয়াকুয়া গ্রামের কৃষক মুসা মন্ডল জানান, ৫ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। শুরুতেই বৃষ্টি না থাকায় দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জমিতে এখন পানি রয়েছে। ধানের চারাগুরো বড় হতে শুরু করেছে। আকাশের বৃষ্টি আমন ধানের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। এখন জমিতে সার কীটনাশক প্রয়োগসহ সঠিক পরিচর্যা করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়লে এবার বাম্পার ফলনের আশাবাদী তিনি।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button