বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দশম প্রতিরক্ষা সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে আজ। সূত্র বলছে, এতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে দুই দেশের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়েও কথা হবে। সংলাপে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) অপারেশন ও পরিকল্পনা অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুসাইন মুহাম্মাদ মাসীহুর রহমান। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের কৌশলগত পরিকল্পনা ও নীতিবিষয়ক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল টমাস জে জেমস।
দুই দেশের এ প্রতিরক্ষা সংলাপে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস), প্রতিরক্ষা চুক্তির অংশ হিসেবে জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া) ও দি অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট (আকসা) নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, সামরিক বাহিনীর মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, দুর্যোগ মোকাবেলা, শান্তিরক্ষা ও প্রতিষ্ঠা, প্রশিক্ষণ, দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের সফর বিনিময়, জঙ্গিবাদ দমনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রেস অ্যাটাশে ও মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিত করার জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বহন করে। পারস্পরিক এ উদ্দেশ্য অনুসরণে ২৩ ও ২৪ আগস্ট ঢাকায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড প্রতিরক্ষা সংলাপ করবে। এতে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বেসামরিক ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। তারা সামরিক শিক্ষা, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং আগামী বছরের দুর্যোগ পরিস্থিতি অনুশীলন ও বিনিময়সহ আসন্ন সামরিক অনুশীলন নিয়ে আলোচনা করবেন। এ সংলাপ আমাদের প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিস্তৃত সম্পর্কের অংশ, যেখানে প্রতিরক্ষাসংশ্লিষ্ট অসংখ্য সহযোগিতার বৈশিষ্ট্য রয়েছে।’
সংলাপে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফর, এ প্রেক্ষাপটে আকসা ও জিসোমিয়া বিষয়ে ১০ আগস্ট সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চান। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘নির্বাচনের আগে মনে হয় না আমাদের লাক্সারি আছে। বিভিন্ন রকম চুক্তি করব বলে আমাদের মনে হয় না। আমাদের এক নম্বর প্রায়োরিটি হচ্ছে দেশের মানুষের মঙ্গল করা। আগে তাদের দুই বেলা খাওয়ানো। খাওয়া আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। আমেরিকায় খাওয়ার জন্য দুশ্চিন্তা করতে হয় না। বেতনের সামান্যতম টাকা খাওয়া বাবদ খরচ করে। আর আমার দেশের লোকের বেতনের সবচেয়ে বড় অংশ খাওয়া বাবদ খরচ হয়।’ ২০১২ সালে ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপ শুরু হয়। ২০২২ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত হয় নবম সংলাপ। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের হনুলুলুতে অনুষ্ঠিত ওই আয়োজনে দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ১৭ ও ১৮ মে অনুষ্ঠিত সংলাপে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়