ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার (১৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘অধ্যক্ষ সম্মিলন ও বৃত্তি প্রদান’ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক বিএনপি-জামায়াত জোটের কখনোই সে ইচ্ছা ছিল না। মানুষকে পদদলিত করে রাখা, অন্ধকারে রাখা এবং শোষণ করে রাখাই ছিল তাদের লক্ষ্য। নিজেরা অবৈধ সম্পদের মালিক হবে- এটাই বোধহয় তাদের চেষ্টা।’
বর্তমানে শিক্ষাঙ্গণে ভালো পরিবেশ বিরাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে অস্ত্রের ঝনঝনানি ও বোমাবাজি ছিল। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি নেই। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৪ বছরে শিক্ষাখাতের আমূল পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার মান ও সব প্রতিষ্ঠান উন্নত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট সময়ে আমরা দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে পেরেছি, আমরা নির্বাচনি ওয়াদা রক্ষা করি। আমরা বাংলাদেশকে যে বদলে দিতে চেয়েছিলাম, সেটা করতে পেরেছি। শুধু শিক্ষা নয়, সার্বিকভাবে দেশকে উন্নত করতে পেরেছি। যার কারণে দেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। পরনির্ভরশীলতা থেকে আত্মমর্যাদাশীল হতে হবে।’
ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিজের গ্রেপ্তারের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘আমাকে যখন বন্দিখানায় নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে বসে দেশের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা ও খাদ্য নিরাপত্তার রূপকল্প তৈরি করেছি। তখন আমি সময়টা হেলায় নষ্ট না করে সেখানে বসে দেশের ভাগ্য উন্নয়নের চিন্তা করেছি। সেজন্য শিক্ষা, চিকিৎসা ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কীভাবে কাজ করা যায়, তার জন্য রূপকল্প তৈরি করেছি। দেশকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তার চিন্তা সবসময় আমার মাথায় ঘুরপাক খেত। আর সেই রূপকল্পই আজ ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে চারটি বিষয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালুসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যান উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী অস্বচ্ছল ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বৃত্তির চেক তুলে দেন সরকারপ্রধান।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শিক্ষায় সর্বোচ্চ ২১ দশমিক এক ছয় শতাংশ বরাদ্দ করে নজির স্থাপন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয় বলে চলতি অর্থবছরেও বরাদ্দ রেখেছে ৮৮ হাজার কোটি টাকার বেশি।’ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২২৫৭টি কলেজের অধ্যক্ষরা অংশ নিয়েছেন।