চলাফেরায় ভাবটা যেন জমিদারের মতোই। প্রায় তিন বছর ধরে পরম মমতা আর ভালোবাসায় জমিদারকে আগলে রাখা রেখেছেন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার খোপাতি গ্রামের বাসিন্দা খামারি আশরাফুল মাস্টার। তার খামারেই জন্ম থেকে বেড়ে উঠেছে শাহিওয়াল জাতের এই গরুটি। খাওয়া-দাওয়া, স্বভাব আর চলনবলনের কারণে আদর করে গরুটিকে ডাকা হয় ‘জমিদার’ নামে। দেশি খাবারে নাদুস-নুদুসভাবে বেড়ে ওঠা ৩৪ মাস বয়সী জমিদারের ওজন এখন ৯০০ কেজি। সরেজমিনে খামারে গিয়ে দেখা যায়, জমিদারকে নিয়ে ব্যস্ত আশরাফুলের পরিবার। বিশাল আকৃতির এই গরুটিকে লালন পালন করে হাটে তোলার জন্য নেয়া হচ্ছে প্রস্তুতি। আর ঈদের হাট মাতাতে প্রস্তুত জমিদারও। আশরাফুল ও তার স্ত্রী শাহিদা বেগমের আদর যত্নে বড় হওয়া সাড়ে ২২ মণ ওজনের জমিদার এখন সবার নজরে।
স্থানীয়রা বলছেন, পুরো গ্রামে জমিদারের মত আরেকটা গরু নেই। জমিদারই তাদের কাছে সেরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষ জমিদারকে এক নজর দেখার জন্য আসছে। গ্রামে অনেকের খামার রয়েছে তবে জমিদারের মতো লম্বা ও বিশাল আকৃতির গরু এখনো তাদের চোখে পড়েনি। জানা গেছে, জমিদার দেশি ও প্রকৃতি নির্ভর খাবার খেয়ে অভ্যস্ত। একারণে দেখতেও অনেক স্বাস্থ্যবান ও শক্তিশালী। হৃষ্টপুষ্ট এই জমিদারকে ঘিরে এলাকার মানুষের যেমন কৌতুহল, তেমনি অন্য খামারি ও ব্যবসায়ীদের রয়েছে আগ্রহ। একারণে প্রতিদিনও কেউ না কেউ আসছেন জমিদারের খোঁজখবর নিতে। কিন্তু দামের সঙ্গে ক্রেতা-বিক্রেতার মনের মিল না হওয়ায় হাত বদল হতে হচ্ছে বিলম্ব।
খামারি আশরাফুল মাস্টারের দাবি, গ্রামে অনেক খামারের মধ্যে তার পোষা গরু ‘জমিদার’ সেরা। আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে জমিদারকে বিক্রি করতে প্রস্তুত তিনি। গরুটির জন্য তিনি হাঁকিয়েছেন ৭ লাখ টাকা। আট ফিট লম্বা ও সাড়ে ৫ ফিট উচ্চতা সম্পন্ন জমিদারের দুটি দাঁত রয়েছে। বর্তমান ওজন ৯০০ কেজির বেশি। জমিদার নাম রাখার কারণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, গরুটির খাওয়া-দাওয়া ও চলাফেরায় বেশ জমিদারি ভাব, তাই বাসার সবাই আদর করে জমিদার বলে। ওই নামে ডাকলে সাড়াও দেয় গরুটি। এখন জমিদার প্রতিদিন ৩ কেজি খুদ চালের ভাত, ৪ কেজি ভুসি, ৪ কেজি ধানের গুড়া, কলা ও ২০ কেজি নেপিয়ার ঘাস খাচ্ছে। এছাড়াও দেশি ও লতাপাতাও জমিদারের বেশ পছন্দ। বর্তমানে প্রতিদিন ব্যয় হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।