সারাদেশে ১৮ জুন (রোববার) ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইন কর্মসূচি পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তবে দুর্গম এলাকায় এই ক্যাম্পেইন চলবে টানা চার দিন। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) হোটেল শেরাটন বনানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ২৫ লাখ শিশুকে নীল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আর ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ শিশুকে খাওয়ানো হবে লাল রঙের ক্যাপসুল। তিনি বলেন, শিশুদের ভরা পেটে ভিটামিন ‘এ প্লাস’ খাওয়াতে হবে। কান্নারত বা অসুস্থ শিশুকে খাওয়ানো যাবে না। ক্যাম্পেইন চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যখাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার ফলে বাংলাদেশে অপুষ্টির হার কমেছে এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। শুধু দেশেই নয়, বিশ্ব নেতৃত্বের পুষ্টি ফোরামে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে রাতকানা রোগের হার ৪.১০ শতাংশ ছিল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম গ্রহণ করে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু করেন। পরে বর্তমান সরকার ২০১০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে বছরে দুইবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা (০.০৪%) প্রায় নেই বললেই চলে।
শিশুর লক্ষ্যমাত্রা
> ৬-১১ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা : প্রায় ২৫ লাখ
> ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ
> ৬-৫৯ মাস বয়সী মোট শিশুর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ
স্বেচ্ছাসেবী ও স্বাস্থ্যকর্মী সম্পর্কে তথ্য
> সর্বমোট কেন্দ্র সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার
> সর্বমোট স্বেচ্ছাসেবী সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার
> সর্বমোট স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার
ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুর উপকারিতা
> অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে
> দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে
> সব ধরনের মৃত্যুর হার ২৪ শতাংশ হ্রাস করে
> এছাড়াও হাম, ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়ার কারণে মৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করে
প্রসঙ্গত, বরাবরের মতো এবারেও ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের যৌথ আয়োজনে রয়েছে জাতীয় পুষ্টিসেবা, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।