হিরো অফ দি ডে

হলুদ ও কালো তরমুজ চাষে প্রবাস ফেরত যুবকের বাজিমাত

কুষ্টিয়াকুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যুবক মো. শামিম হোসেন (৩২)। প্রায় নয় বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে ২০২০ সালে গ্রামে ফিরেছেন। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারেণ তার আর বিদেশ ওমানে যাওয়া হয়নি। তাই গ্রামে থেকেই কিছু একটা করবেন বলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কী করা যায়, এ ব্যাপারে সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না তিনি। অবশেষে তিনি সিদ্ধান্ত নেন বাপ-দাদার পৈতৃক পেশা কৃষিকাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করবেন। কিন্তু তিনি সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে চান না। তিনি আধুনিক পদ্ধতিতে লাভজনক চাষাবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন। সেজন্য তিনি চাষাবাদ শেখার জন্য ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তার স্মার্টফোনের স্কিনের ইউটিউবে হঠাৎ একদিন ভেসে ওঠে যশোর এগ্রো-১ এর ইয়োলো (হলুদ) গোল্ড জাতের তরমুজ চাষের ভিডিও। ভিডিও দেখে তিনি খুব মুগ্ধ হন ও তরমুজ চাষের জন্য সিদ্ধান্ত নেন।

এরপর তিনি অনলাইনে ইয়োলো গোল্ড ও স্মার্টবয় (কালো জাতের) তরমুজের বীজ ক্রয় করেন এবং কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় চাষাবাদ শুরু করেন। মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে তিনি হলুদ ও কালো জাতের তরমুজ চাষ করে দেড় মাসে এক লাখ ৪৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করছেন। তিনি আগামী ১০ দিনের মধ্যে আরও ৩০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রির প্রত্যাশা করছেন। আর এর জন্য তার খরচ হয়েছে মাত্র ২২ হাজার ৬৯০ টাকা।

শামিম হোসেন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের কৃষক মো. এলাহী মন্ডলের ছেলে। তিনি প্রথমবারের মতো হলুদ ও কালো জাতের তরমুজ চাষাবাদ করে এলাকায় ব্যাপক সারা ফেলেছেন। কম সময় ও খরচে অধিক লাভ হওয়ায় অন্য কৃষকরাও এ চাষে আগ্রহ বাড়াচ্ছে।

সরেজমিন উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে মিরপুর মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মালচিং পদ্ধতিতে সারিবদ্ধভাবে কৃষক শামিম গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষাবাদ করছেন। জালের ব্যাগে তার জমির মাচাতে কালো ও হলুদ তরমুজ ঝুলছে। প্রতিটি তরমুজের ওজন প্রায় দেড় থেকে সাড়ে ৪ কেজি।

এসময় কৃষক শামিম হোসেন বলেন, নয় বছর পর দেশে ফিরে করোনার কারণে আর বিদেশে যাওয়া হয়নি তার। তাই তিনি আধুনিক ও লাভজনক চাষাবাদের সিদ্ধান্ত নেন। সেজন্য তিনি ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও দেখতেন। একদিন যশোর এগ্রো-১ এর তরমুজ চাষের ভিডিও দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হন ও এ চাষের সিদ্ধান্ত নেন। পরে অনলাইনে অর্ডার করে বীজ সংগ্রহ করেন এবং কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শে তিনি গত এপ্রিলে ২০ শতাংশ জমিতে হলুদ ও কালো জাতের তরমুজ মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করেন। শামিম হোসেন জানান, চারা রোপণের মাত্র ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে গাছে ফল ধরতে শুরু করে এবং ৪০-৪৫ দিনের মধ্যেই ফল পরিপক্ব হয়। প্রতিটি তরমজুের ওজন প্রায় দেড় থেকে সাড়ে ৪ কেজি। প্রতি কেজি তরমুজ তিনি ৭০ টাকা করে বিক্রি করেছেন।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button