এলএনজি রফতানিতে নেতৃস্থানীয় হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চাহিদার প্রধান উৎস হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে দেশটি অস্ট্রেলিয়া ও কাতারকে হটিয়ে বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি রফতানিকারক দেশ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় শিপব্রোকার বাঞ্চেরো কস্তা।চলতি বছরের প্রথম চার মাসে বৈশ্বিক এলএনজি লোডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। লোডিং হয়েছে ১৪ কোটি ৩ লাখ টন। বৈশ্বিক এলএনজি রফতানিতে উদীয়মান নেতৃস্থানীয় হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর রফতানিতে দেশটি ছিল তৃতীয়। প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল অস্ট্রেলিয়া ও কাতার।
২০২২ সালে এলএনজি রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্রের হিস্যা ছিল ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ। বছরজুড়ে দেশটি ৭ কোটি ৯৪ লাখ টন এলএনজি রফতানি করে। আগের বছর রফতানির পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ২৫ লাখ টন। সে হিসাবে রফতানি ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। দেশটি থেকে রফতানি কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে। এর মধ্যে ২০২১ সালে ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ, ২০২০ সালে ৩১ দশমিক ৮, ২০১৯ সালে ৬৬ দশমিক ৩ ও ২০১৮ সালে ৫৪ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এসেছে।
বাঞ্চেরো কস্তা জানায়, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে যুক্তরাষ্ট্র ২ কোটি ৮৮ লাখ টন এলএনজি রফতানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। একই সময় অস্ট্রেলিয়া রফতানি করেছে ২ কোটি ৭৫ লাখ টন। প্রবৃদ্ধির হার কম হলেও তা যুক্তরাষ্ট্রকে শীর্ষস্থান দখল করে নিতে সাহায্য করেছে। জানুয়ারি-এপ্রিল পর্যন্ত কাতার রফতানি করেছে ২ কোটি ৭০ লাখ টন এলএনজি। এক বছরের ব্যবধানে দেশটির রফতানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাজার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রেফিনিটিভের দেয়া তথ্য বলছে, সমুদ্রপথে গত বছর বৈশ্বিক এলএনজি রফতানি ব্যাপক বাড়ে। রফতানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪০ কোটি ৪৩ লাখ টনে, যা আগের বছরের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এলএনজি আমদানিতে ইউরোপ রাশিয়ার ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনছে। বিকল্প বাজার থেকে অঞ্চলটি জ্বালানিটির সরবরাহ নিশ্চিত করছে।
ইউরোপের বাজারে গত বছর এলএনজির চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। বছরজুড়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১০ কোটি ৯ লাখ টন এলএনজি আমদানি করে। এক বছরের ব্যবধানে আমদানি বেড়েছে ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২১ সালে অঞ্চলটি ৫ কোটি ৯৭ লাখ টন এলএনজি আমদানি করেছিল।
২০২২ সালে বৈশ্বিক এলএনজি আমদানির ২৪ দশমিক ৯ শতাংশই গেছে ইউরোপের ২৭টি দেশে। একই সময় যুক্তরাজ্য আমদানি করেছে ১ কোটি ৯৪ লাখ টন। ২০২১ সালের তুলনায় দেশটির আমদানি ৭৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে এশিয়ায় আমদানি ২০২১ সালের তুলনায় কমেছে। চীনের মূল ভূখণ্ডে আমদানি হয়েছে মাত্র ৬ কোটি ৪৪ লাখ টন। এক বছরের ব্যবধানে আমদানি ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। ২০২১ সালে দেশটি আমদানি করেছিল ৭ কোটি ৯০ লাখ টন। ভারতেও আমদানি ১৮ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯১ লাখ টনে, যা আগের বছর ছিল ২ কোটি ৩৪ লাখ টন। জাপানের আমদানি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ৭ কোটি ৩৬ লাখ টনে নেমেছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় আমদানি ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৪ কোটি ৭৪ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে।