দেশে নারীদের ক্যান্সারের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জরায়ু ক্যান্সারের অবস্থান। নারী ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ১৪ শতাংশই জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। নারীদের ক্যান্সারের প্রথম অবস্থানে স্তন ক্যান্সার। জরায়ু ক্যান্সার টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। এ টিকা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন আলোচকরা।
অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) আয়োজিত ৩১তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের শেষ দিনে জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধবিষয়ক বিশেষ ওই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে ওজিএসবি সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে কাজ করলে জরায়ু মুখের ক্যান্সার অন্তত ৯৮ শতাংশ কমিয়ে ফেলতে পারব। এজন্য আমাদের চিকিৎসকদের বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে হবে। ভ্যাকসিন নিয়ে সমাজে যেসব ভুল ধারণা রয়েছে, সেগুলো ভাঙতে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। তৃণমূলের মেয়েদের ভ্যাকসিনের উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের বোঝাতে এবং তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জরায়ু মুখের ক্যান্সার হলে আমাদের মা ও মেয়েদের কত কষ্ট করতে হয় সেটা আমাদের চিকিৎসকদের চেয়ে কেউ ভালো জানে না। তাই প্রত্যেক চিকিৎসককে সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। জরায়ু মুখের ক্যান্সার নির্মূলে ভ্যাকসিন এসেছে। সবার জন্য এ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে ওজিএসবি সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনগুলোর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করবে।’
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগিতায় বৈজ্ঞানিক এ সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে আরো দায়িত্ব পালন করেন প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) রোকেয়া খান। অধিবেশনে আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিম লিডার (ইমুনাইজেশন ও ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট) ইউনিসেফের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. রিয়াদ মাহমুদ, আইসিডিডিআর,বির ডা. তাজুল এ বারি, ইপিআইয়ের ডা. তানভীর হোসেনসহ বিভিন্ন সংগঠনের বিশেষজ্ঞরা। বক্তারা সবাই জরায়ু মুখের ক্যান্সার নির্মূলে তাদের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। অধিবেশন পরিচালনা করেন ডা. নাজিয়া আহমেদ ও ডা. কাশেফা খাতুন। উল্লেখ্য, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসসহ দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে জরায়ু মুখের ক্যান্সারের টিকা বাজারে এনেছে।