অর্থনীতিহাইলাইটস

বিদেশে বাংলাদেশী ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ ব্যবহার ভারতে

বিদেশে বাংলাদেশী ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ ব্যবহার ভারতেদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে। দেশের বাইরে লেনদেনে (ডলার) সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার হয়েছে ভারতে। অর্থের হিসাবে যা গত মার্চে ১০৩ দশমিক ৬ কোটি এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭৩ দশমিক ২ কোটি টাকা। একই সঙ্গে দেশের পাশাপাশি বিদেশে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের কেনাকাটায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এ লেনদেনে বাংলাদেশী ব্যবহারকারীর পাশাপাশি রয়েছে বিদেশীরাও। গত মার্চে দেশে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ২ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৭ কোটি টাকা, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ২ হাজার ১৬২ দশমিক ৮ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগ দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দুই মাসের ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনসংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। এতে দেশের অভ্যন্তরে বিদেশী নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারের তথ্যও উঠে এসেছে।

গত মার্চে দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৪২৬ দশমিক ২ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। তথ্যানুযায়ী, এ মাসে বিদেশে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন বাড়ে ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। যেখানে ফেব্রুয়ারিতে দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩১২ দশমিক ৯ কোটি টাকা।  একই সঙ্গে মার্চে দেশের অভ্যন্তরে বাইরে থেকে ইস্যু করা অর্থাৎ বিদেশী নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে দেশের বাইরের ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২১৪ দশমিক ৬ কোটি টাকা, মার্চে যা বেড়ে হয়েছে ২৩৬ দশমিক ৭ কোটি টাকা।

ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারের ধরন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেশি হয়েছে দেশের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। মোট ক্রেডিট কার্ড লেনদেনে এর পরিমাণ ৫৫ দশমিক ২৫ শতাংশ অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি লেনদেন হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোয়। এছাড়া ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে অর্থ স্থানান্তরের (ফান্ড ট্রান্সফার) ক্ষেত্রে। ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ ইউটিলিটি, ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ নগদ অর্থ উত্তোলন, ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ পোশাক কেনাকাটা, ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ ওষুধ ও ফার্মেসিতে, ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ ট্রান্সপোর্টেশন, ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ ব্যবসা সেবা এবং দশমিক ৮২ শতাংশ ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন হয়েছে অন্যান্য প্রয়োজনে লেনদেনে কার্ডের ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিসা কার্ডের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এ সময়ে। এর পরিমাণ ৭০ দশমিক ২৬ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে মাস্টার কার্ড, এ কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ১৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এছাড়া বাকি প্রায় ১৩ শতাংশ লেনদেন হয়েছে অন্যান্য কার্ডের মাধ্যমে।

এছাড়া দেশের ক্রেডিট কার্ডহোল্ডারদের ক্রস বর্ডার লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের মতো বিদেশেও একই ধরনের জায়গা ও প্রয়োজনে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার হয়েছে। মার্চে বিদেশে প্রায় ৪৪ শতাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে ওষুধ ও ফার্মেসিতে ১৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ, পোশাক কেনাকাটায় ১১, ট্রান্সপোর্টেশনে ৬ দশমিক ৯২ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ২৩ দশমিক ৭২ শতাংশ।

দেশভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের বাইরে লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার হয়েছে ভারতে। এর পরিমাণ ২৪ দশমিক ৩২ শতাংশ, অর্থের হিসাবে যা ১০৩ দশমিক ৬ কোটি টাকা। এছাড়া লেনদেনে অন্যান্য দেশ হিসাবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ১১ দশমিক ৯৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ৯ দশমিক ৯২, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৯ দশমিক ৭০, সিঙ্গাপুরে ৮ দশমিক শূন্য ৭, যুক্তরাজ্যে ৫ দশমিক ৮৪, সৌদি আরবে ৫ দশমিক ৩৩, মালয়েশিয়ায় ৩ দশমিক ৯০, কানাডায় ৩ দশমিক ৭৯, নেদারল্যান্ডসে ৩ দশমিক ২১, আয়ারল্যান্ডে ২ দশমিক ৩৫, অস্ট্রেলিয়ায় ২ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং অন্যান্য ১৬২ দেশে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

দেশের ভেতরে বিদেশী নাগরিকরাও তাদের ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কেনাকাটায়। এর পরিমাণ ৪০ দশমিক ৬৯ শতাংশ, অর্থের হিসাবে ৯৬ দশমিক ৩ কোটি টাকা। এছাড়া এসব কার্ডের মাধ্যমে নগদ অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ (৫৩ দশমিক ৫ কোটি টাকা), ট্রান্সপোর্টেশনে ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ (৫৩ দশমিক ২ কোটি) এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে লেনদেনের পরিমাণ ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। কার্ড হিসাবে বিদেশী নাগরিকরা লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ব্যবহার করেছে ভিসা কার্ড। মোট লেনদেনে যা প্রায় ৬০ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মাস্টারকার্ড, এটি প্রায় ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button