২০ বছর হাদিয়া ছাড়াই তারাবি পড়ান হাফেজ আব্দুর রউফ
গত ২০ বছর কোন ধরনের হাদিয়া ছাড়াই তারাবি নামাজ পড়াচ্ছেন হাফেজ মুফতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ। তার অভিমত, কুরআনের বিনিময় হয় না। কোনো হাদিয়া বা সম্মানী দিয়ে একজন হাফেজের শ্রমকে মূল্যায়ন করা যায় না। তাই তিনি তারাবি পড়িয়ে কোনো হাদিয়া নেন না। বর্তমানে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করছেন এই হাফেজ। এক সময় মুসল্লিদের থেকে পাওয়া দান-অনুদানের টাকায় তারাবির হাফেজদের হাদিয়া দেওয়ার রেওয়াজ ছিল এই মসজিদে।
কিন্তু ২০ বছর আগে সেই রেওয়াজ বন্ধ করে দেন হাফেজ আব্দুর রউফ। তিনি যে বছর থেকে তারাবি পড়ান শুরু করেন, তখন থেকেই হাদিয়া নেওয়ার নিয়ম বন্ধ হয়ে যায়। এই মসজিদে আব্দুর রউফসহ আরও দুজন হাফেজ তারাবি পড়ান। সমন্বয় করে তিনজন হাফেজ ২০ রাকাত তারাবি নামাজ সম্পন্ন করেন।
মোহাম্মদ আব্দুর রউফ শুধু হাফেজই নন, তিনি একজন মুফতি। মসজিদের খতিবের পাশাপাশি হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের আওতাধীন জামিয়া আহমাদিয়া কাওমী মাদরাসার মুহতামিম তিনি। ওই মাদরাসায় বর্তমানে প্রায় ১১০০ ছাত্র নূরানী, কিতাব, নাজেরা, হিফজ বিভাগে পড়ছেন।
আব্দুর রউফসহ বাকি দুই হাফেজ হাদিয়া না নেওয়ার বিষয়ে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মুতায়াল্লি ড. মো. আলমগীর কবির পাটওয়ারী বলেন, বিগত ২০ বছর আগে মসজিদ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে দান-অনুদানের টাকা সংগ্রহ করে হাফেজদের হাদিয়ে দিয়েছি। কিন্তু বর্তমান খতিব হাফেজ মুফতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ যে সময় থেকে তারাবি পড়াতে শুরু করেন তখন থেকেই এ রেওয়াজ বন্ধ হয়। কারণ তিনি আমাদের বলেছেন, কুরআনের বিনিময় হয় না। তখন থেকে তিনিও হাদিয়া নেন না এবং আরও সহযোগী দুইজন হাফেজ হাদিয়া ছাড়া তারাবি পড়াচ্ছেন। তবে সহযোগী হাফেজদের মধ্যে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হয়। নতুন কেউ আসলেও একই নিয়মে চলে আসছেন।
হাজীগঞ্জ আহমাদ আলী পাটওয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেটের ভারপ্রাপ্ত মুতাওয়াল্লিা প্রিন্স সাকিল আহমেদ বলেন, হাফেজ মুফতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ গত ২০ বছর আগে মসজিদ ও মাদরাসার খেদমতে আছেন। তিনি সপরিবারে এখানে থাকেন। তার নিজ জেলা ময়ময়নসিংহ। তিনজন ইমামকেই মসজিদ কমপ্লেক্স থেকে ইমামতির জন্য সম্মানী দেওয়া হয়। তারাবির জন্য কোনো হাদিয়া দিতে হয় না।
হাফেজ মুফতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, এ বছর আমার সঙ্গে তারাবি নামাজ পড়াচ্ছেন হাফেজ মাওলানা আনাছ ও হাফেজ মাওলানা এমদাদ উল্লাহ। আমি জুমার খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বাকি দুজন পেশ ইমাম হিসেবে নামাজ পড়ান। রমজানে তারাবি পড়ানোর জন্য আলাদা করে কোনো হাফেজ নিয়োগের প্রয়োজন হয় না এই মসজিদে। কারণ, খতিব ও পেশ ইমাম সবাই হাফেজ।