উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও অন্যতম সেরা মিষ্টান্ন নাটোরের কাঁচাগোল্লা এবার জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। নাটোরের রাজ দরবার থেকে যাত্রা শুরু হওয়া ২০০ বছরের বেশি পুরোনো এই মিষ্টান্নকে নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নাটোর জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ তাঁর কার্যালয়ে নিবন্ধনের এফিডেভিট কপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেন।
শহরের লালবাজার এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রভাত কুমার পাল জানান, নাটোর রাজ দরবারে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ী মধুসূদন পাল। একদিন তাঁর সব কর্মচারী অনুপস্থিত থাকায় ২০ মণ ছানা নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। উপায় না পেয়ে কাঁচা ছানার মধ্যে চিনি মিশিয়ে নিজেই কড়াইতে জাল দিয়ে মিষ্টি বানিয়ে ফেলেন। পরে সেই মিষ্টি রাজ দরবারে পাঠানোর পর রানী ভবানীর বেশ পছন্দ হয়। রানী মিষ্টির নাম জানতে চাইলে মধুসূদন নাম দেন কাঁচাগোল্লা। এরপর নাটোরের রাজ দরবার থেকে এই মিষ্টি উপমহাদেশের বিভিন্ন রাজদরবারে উপহার হিসেবে পাঠানো হতো। এভাবেই ছড়িয়ে পড়ে নাটোরের কাঁচাগোল্লার নাম। তবে নামে কাঁচাগোল্লা হলেও এটি মোটেও গোল নয়।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ‘কাঁচাগোল্লার সঙ্গে নাটোরের আবেগ ও মর্যাদা জড়িত। আদি কাঁচাগোল্লার প্রকৃতি পরিবর্তন করে অনেক স্থানে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি বিক্রি করা হচ্ছে। এটি নাটোরের কাঁচাগোল্লার জন্য হানিকর। এক সময় প্রকৃত কাঁচাগোল্লা হারিয়ে যেতে পারে। তাই এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
খুব শিগগিরই নাটোরের কাঁচাগোল্লা জিআই (ভৌগলিক নির্দেশনা) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।