খেলাধুলাহাইলাইটস

বাংলাদেশ যুব গেমস-২০২৩’এর চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন

 বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ) আয়োজিত ‘শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস-২০২৩’এর চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : আইএসপিআর
বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ) আয়োজিত ‘শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস-২০২৩’এর চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : আইএসপিআর

বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ) আয়োজিত ‘শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস-২০২৩’এর চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে নতুন আসরের চূড়ান্ত পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেলাধুলার জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন ও আধুনিক কাঠামোতে রূপান্তরিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিতে তিনি ১৯৭২ সালে গঠন করেন ‘ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা’। সে সময় একে একে গড়ে ওঠে সাঁতার, হকি, ভলিবল, অ্যাথলেটিকস, টেনিস ইত্যাদি ফেডারেশন। এক কথায় রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই ক্রীড়াঙ্গনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শেখ কামাল ছিলেন দেশের অন্যতম ক্রীড়া সংগঠক ও তারুণ্যের প্রতীক। তাঁর যৌবন দীপ্ত ক্রীড়াশৈলী দেশের তরুণদের প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে। তিনিই প্রথম এ দেশে আধুনিক ধারার ক্লাব ‘আবাহনী ক্রীড়া চক্র’ প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী শেখ কামাল ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড’ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। এটা ছিল তাঁর দূরদর্শী ভাবনা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ফসল। শুধু ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল নয় হকিতেও তিনি নতুন দিনের সূচনা করেছিলেন। সুদক্ষ সংগঠক, খ্যাতিমান ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব শেখ কামাল সমগ্র ক্রীড়াঙ্গনে নবযুগের শুভ সূচনা করেছিলেন।মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল আমাদের জন্য যে নীতি আদর্শ, কর্মপন্থা ও দিক-নির্দেশনা রেখে গেছেন, আশা করি আমাদের যুব সমাজ তাঁর আদর্শকে সামনে রেখে নিজেদেরকে গড়ে তুলবে। বর্তমান সরকার ক্রীড়াক্ষেত্রের সম্প্রসারণ এবং খেলাধুলার মান উন্নয়নে অনেক পরিকল্পনা  বাস্তবায়ন করেছে। দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে তরুণ প্রতিভাবান ছেলে-মেয়েরা যাতে তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায়, সে জন্য দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কর্মসূচী ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সারা বছর বিভিন্ন ধরণের প্রতিযোগিতার আয়োজন করছি।”

ক্রীড়া ক্ষেত্রে সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইতোমধ্যে বাংলাদেশের নারীরা সাফ অনুর্ধ্ব-১৯ ফুটবল, সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ এবং সাফ অনুর্ধ্ব- ২০ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। সম্প্রতি কাজাকিস্তানে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের ইমরানুর রহমান ৬০ মিটার স্প্রিন্টে সেরার স্বর্ণ মুকুট অর্জন করে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় কৃতিত্বের সাথে অংশগ্রহণ করে। যা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে।”

আজ অনুষ্ঠানের শুরুতে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ৬০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ পদক অর্জন করা ইমরানুর রহমানকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ১১ লাখ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। চেক তুলে দেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও শেখ কামাল দ্বিতীয়  বাংলাদেশ যুব গেমস-এর কো-চেয়ারম্যান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ।

বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতা ও দিক নির্দেশনা এবং অনুপ্রেরণার কারণেই সেনাবাহিনী ও বিওএ দেশের সর্ববৃহৎ এই যুব গেমসের আয়োজন করতে পেরেছি।’

বিওএ মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, ‘এই গেমসের মাধ্যমে ক্রীড়াঙ্গনে নবজাগরণ হবে এবং আগামীর ক্রীড়াবিদদের আমরা খুঁজে বের করতে পারব।’

২০১৮ সালে প্রথমবার অনূর্ধ্ব-১৭ বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসিসিয়েশন (বিওএ)। তখন ২১টি  খেলা হয়। এবার খেলা ২৪টি। এবারের যুব গেমসের প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিল ২ জানুয়ারি, উপজেলা পর্যায়ে। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় ১৬ জানুয়ারি, জেলা পর্যায়ে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো চূড়ান্ত পর্যায়।

শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস-২০২৩ মোট তিনটি পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চূড়ান্ত পর্বে বাস্কেটবল, ফুটবল, হকি, কাবাডি, অ্যাথলেটিক্স, স্কোয়াস, সাইক্লিনিং, ভারোত্তোলনসহ মোট ২৪টি ডিসিপ্লিনে সর্বমোট আনুমানিক ৪০০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করবেন। আগামী ০৪ মার্চ ২০২৩ তারিখে চূড়ান্ত পর্বের সমাপনী অনুষ্ঠান বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button