ভুমিকম্প দুর্গত এলাকায় সবই ফ্রি !!!
হঠাৎ করেই এক্সিডেন্ট। ভাঙা এক ভবনের ইট-কাঠ সরাতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে, বড় অঘটন থেকে বাঁচলেও হাত কেটে ফেললাম। দুর্ঘটনা স্থলেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিম দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে দিলেন। এখন সুস্থ। ভুমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কের প্রতিটি এলাকাতেই এখন চলছে অসম্ভব এক মানবতা। বাংলাদেশ থেকে আসা আমাদের সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে তুর্কি জনগন শিখিয়ে দিচ্ছে কি করে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। রাস্তায় আমাদের তিন বেলা খাবার দিচ্ছে তারা। পথে পথে চুলা জ্বালিয়ে চা-কফি তৈরি করে হাতে নিয়ে সাধছে।
ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে ঘুমের মধ্যে গায়ে দিয়ে যাচ্ছে কম্বল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ইশারা করলেই গাড়িতে তুলে এক জায়গা থেকে নিয়ে যাচ্ছে আরেক জায়গায়। সব ফ্রি। এমন কি, এক শহর থেকে আরেক শহরে যেতে সবার বিমান ভাড়াও ফ্রি করে দিয়েছে টার্কিশ এয়ালাইনস। বিমানবন্দর গুলোতে অপেক্ষামান মানুষজনকে বুফে করে খাবার দেয়া হচ্ছে। মোবাইল কোম্পানি গুলো কল ও ডাটা ফ্রি করেছে দুর্গত এলাকায়। ওষুধের জন্য কোন টাকা নিচ্ছে না ফার্মেসি। জুতা – জামাও পাওয়া যাচ্ছে ফ্রি তে।
অর্থাৎ, এতো বড় বিপদ হাতে হাতে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামাল দিচ্ছে সবাই। কেউ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত নেই। কেউ বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে না। খাবার, ত্রান নিয়ে কোন হুড়োহুড়ি – মারামারি নেই। সবাই পাচ্ছে। না পেলে অপেক্ষা করছে। কোন উঁচ্চবাচ্য নেই। একজনের বিপদ দেখে আরেকজন এড়িয়ে যাচ্ছে না। যেন এক পরিবারের সবাই। আশেপাশে থাকা সকলেই আত্মীয়। কি অভুতপূর্ব সমন্বয় আর সহনশীলতা। বিভিন্ন এলাকার হাজারো মানুষ তার বাড়ি থেকে খাবার, কম্বল , জিনিসপত্র এনে বিলিয়ে দিচ্ছে দুর্গত এলাকার অসহায়দের। শিশুদের যত্ন করছে। এমনকি মালিকবিহীন কুকুর-বিড়ালও আদর যত্ন পাচ্ছে। এতো এতো ভালোবাসা আর সাহসে দ্রুত এই মহাদুর্যোগ সামলে উঠছে তুরস্কের মানবিক এই মানুষেরা। এমন যেনো আমরাও সব বিপদে করতে পারি। শিক্ষা হোক এবার।