ঘূর্ণিঝড়ে বছরে বাংলাদেশের ক্ষতি এক বিলিয়ন ডলার: বিশ্বব্যাংক
গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গড়ে প্রতিবছরে বাংলাদেশের ক্ষতি হয় এক বিলিয়ন ডলার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ২০৫০ সালের মধ্যে কৃষি জিডিপির এক-তৃতীয়াংশ কমে যেতে পারে। একই সঙ্গে ১৩ মিলিয়ন মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে জলবায়ু অভিবাসী হতে পারে। সোমবার (৩১ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বাংলাদেশের জন্য জরুরি জলবায়ু কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, জলবায়ু বিপর্যয়ে মানুষের মৃত্যু কমাতে উল্লেখযোগ্য অর্জন থাকলেও বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে গুরুতর ও ক্রমবর্ধমান জলবায়ু ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ‘কান্ট্রি ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, অধিকতর অভিযোজন এবং অভিঘাত সহিষ্ণু পদক্ষেপসহ জরুরি কার্যক্রম গ্রহণ ছাড়া দেশটির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি সম্ভাবনা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য অগ্রাধিকার কার্যক্রম এবং অর্থায়ন চাহিদা চিহ্নিত করা হয়েছে।
রিপোর্টটি স্থানীয় সমাধানের মাধ্যমে জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশের সফল অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছে ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির জন্য জলবায়ু সহিষ্ণুতা জোরদার করতে অবকাঠামো এবং সেবায় বিনিয়োগের সুপারিশ করেছে। উন্নত কৃষি উৎপাদনশীলতা এবং জ্বালানি ও পরিবহন দক্ষতার ওপর জোর দিয়ে কার্যক্রম হাতে নিলে বায়ু, মাটি এবং পানির গুনগত মান বাড়ানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারে।
মধ্য মেয়াদি জলবায়ু কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাড়তি অর্থায়ন যোগাড় করতে পারবে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। অর্থায়নের বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বাজেটে অগ্রাধিকার নির্ধারণ, কার্বন কর, বৈদেশিক অর্থায়ন এবং বেসরকারি বিনিয়োগ। বড় বন্যা হলে দেশের জিডিপি ৯ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে আশঙ্কা করা হয়েছে।
সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইসার বলেন, অভিযোজন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। গত ৫০ বছরে দেশটি ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যুর সংখ্যা একশ শতাংশ কমিয়েছে, অন্যান্য দেশ যা থেকে শিখতে পারে। কিন্তু জলবায়ু ঝুঁকি বাড়তে থাকায় অভিযোজন প্রচেষ্টা জোরদার করা অত্যাবশ্যক এবং নিম্ন কার্বন উন্নয়ন গতিপথ বাংলাদেশের অভিঘাত সহিষ্ণু ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।