চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি শি জিনপিংকে তৃতীয়বারের মতো পাঁচ বছরের জন্য দেশটির শাসন কর্তা হিসেবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে শি ১৯৭০ এর দশকের মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছেন।
২০১৮ সালে দুই মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় না থাকার বিষয়ে যে আইনটি ছিল তা বাতিল করার মাধ্যমে শি জিনপিং আরও শক্ত হাতে চীনের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে ধারনা করা হচ্ছে ৬৯ বছর বয়সী শি সম্ভবত সারা জীবনের জন্য চীনের শাসনকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে ১৬ অক্টোবর শুরু হতে যাচ্ছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলন যাকে মনে করা হচ্ছে পার্টির ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
শি জিনপিং এই মুহূর্তে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি একাধারে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক বা পার্টির প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে এবং রয়েছেন চীনের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান বা দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে। এক কথায় তাকে দেশটির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী বা সর্বোচ্চ নেতা বলা হয়।
শি জিনপিং পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ ধরে রাখতে চান পাশাপাশি ২০২৩ সালের বসন্তে অনুষ্ঠিতব্য পার্টির জাতীয় কংগ্রেসে দেশের প্রেসিডেন্ট পদটিও ধরে রাখতে চান তিনি।
আগামি সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পার্টির সম্মেলনে তিয়ানআনমেন স্কয়ারের গ্রেট হলে ২,৩০০ ডেলিগেট জড়ো হতে যাচ্ছেন। এখান থেকে ২০০ জনকে নির্বাচিত করা হবে কেন্দ্রীয় কমিটির জন্য পাশাপাশি ১৭০ জনকে রাখা হবে বিকল্প সদস্য হিসেবে। কেন্দ্রীয় কমিটি এখান থেকে ২৫ জনকে পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করবেন। পলিটব্যুরো পরে স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের নিয়োগ দেবে। পার্টির সাধারণ সম্পাদক শি জিনপিংসহ এখানে থাকবেন মোট সাতজন। এখানে সবাই পুরুষ। কেন্দ্রীয় কমিটি মূল কংগ্রেস শেষ হওয়ার একদিন পর বৈঠকে বসবে।
শি জিনপিং আবারও নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এবং অন্যতম বৃহৎ সামরিক বাহিনীর দেশটিকে। বিশ্লেষকরা বলছেন তাঁর তৃতীয় মেয়াদে চীন আরও কর্তৃত্ববাদী রাজনৈতিক অবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্ভবত মাও সেতুংয়ের পর তিনিই হতে যাচ্ছেন আরও একজন বিরোধীতাহীন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।