প্রবাসহাইলাইটস

রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএমসিসিআইয়ের নেতাদের সমন্বয় সভা

মালয়েশিয়ায় ডিসেম্বরে শোকেস বাংলাদেশ

মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কনফারেন্স হলে বিএমসিসিআই এর সমন্বয় সভার সভাপতিত্ব করছেন রাষ্ট্রদূত মো: গোলাম সারোয়ার।
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কনফারেন্স হলে বিএমসিসিআই এর সমন্বয় সভার সভাপতিত্ব করছেন রাষ্ট্রদূত মো: গোলাম সারোয়ার।

মালয়েশিয়ায় ডিসেম্বরে অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে ৬ষ্ট বারের মতো শোকেস বাংলাদেশ। বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহায়তায় বিএমসিসিআইয়ের উদ্যোগে ট্রেড ফেয়ারের মাধ্যমে বাংলাদেশি পণ্যের নতুন রফতানি বাজার খুঁজে পেতে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় শোকেস বাংলাদেশে বাংলাদেশি পণ্যের প্রদর্শনী ছাড়াও পুরো বাংলাদেশেরই শোকেস করা হবে। তুলে আনা হবে নতুন ফোকাস।
শোকেস বাংলাদেশ সফল করার লক্ষ্যে ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কনফারেন্স হলে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমন্বয় সভার সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রদূত মো: গোলাম সারোয়ার।
বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলমাছ কবির, সেক্রেটারি জেনারেল মো: মোতাহার হোসেন খাঁন, জয়েন্ট সেক্রেটারি রোবাইয়াত আহসান ও পরিচালক মাহবুব আলম শাহ সহ বিএমসিসিআইয়ের ১০ জন প্রতিনিধি দল সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন, মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ এ খাস্তগীর, মিনিষ্টার লোবার নাজমস সাদাত সেলিম, দূতালয় প্রধান কাউন্সিলর রাজনৈতিক মো: রুহুল আমিন, পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার প্রথম সচিব মিয়া মোহাম্মদ কিয়াম উদ্দিন, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ।
সময়োপযোগী এ উদ্যোগ বিশ্ববাজারে ব্র্যান্ড হিসেবে বাংলাদেশকে আরও প্রতিষ্ঠিত করবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। বাংলাদেশি বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সেক্টরের পেশাজীবীরা অংশ নেবেন।
শোকেস বাংলাদেশে বিভিন্ন পণ্যের রফতানির সুযোগ তৈরি করাই টার্গেট থাকবে বাংলাদেশের। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে ফোকাস করা হবে।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো: গোলাম সারোয়ার আসন্ন শোকেস বাংলাদেশ নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে বলেন, দুই দেশের মধ্যকার মুক্তবাণিজ্য (এফটিএ) স্বাক্ষরের পথ প্রশস্ত হবে। বর্তমানে ৯৩টি বাংলাদেশি পণ্য মালয়েশিয়ার বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। মালয়েশিয়া ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধা দূর করলে সেখানে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি অনেক বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশই বাংলাদেশকে এ ধরনের সুবিধা প্রদান করছে। মালয়েশিয়ার বাজারে বাংলাদেশের পাট-পাটজাত পণ্য, মসলা, চামড়া- চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, আলু, শাক-সবজি, সিরামিক টেবিল ওয়্যার, হিমায়িত মাছ, তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার, টেকসটাইল ও হালাল খাদ্য পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তিনি আরোও বলেন, মালয়েশিয়া আমাদের বড় একটি শ্রমবাজার। বর্তমানে শ্রম নিয়োগ চলমান রয়েছে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত বন্ধু রাষ্ট্র ও ব্যবসায়িক পার্টনার। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে আসছে।
বিএমসিসিআই এর সভাপতি সৈয়দ আলমাছ কবির বলেন, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা সম্প্রসারণের কৌশল হিসাবে সভা, সেমিনার, ব্যবসায়িক ফোরাম, বাণিজ্য মেলা, বিটুবি মিটিং, সিম্পোজিয়াম ইত্যাদির মতো প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা চলমান রেখেছে। ‘শোকেস বাংলাদেশ’ এবং ‘শোকেস মালয়েশিয়া’- বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বারের সিগনেচার ইভেন্ট যা প্রতি বছর বাংলাদেশ অথবা মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। আমরা মালয়েশিয়ান বিনিয়োগের পাশাপাশি বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগকেও উৎসাহিত করি।
অতীতে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও সম্প্রতি আমাদের রপ্তানি সক্ষমতা বেড়েছে। গত ২৫ বছরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি গড়ে ১২.৪% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে আমরা ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যের পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
দূতাবাসের সমন্বয় সভা শেষে শোবিএমসিসিআইয়ের নেতারা জালান দূতায় শোকেস বাংলাদেশ সফল করার লক্ষ্যে মিনিষ্ট্রি অফ ইন্টা: ট্রেড এন্ড ইন্ডাষ্টি মালয়েশিয়ার নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মেট্রেডের সিনিয়র পরিচালক আমরান ইয়েন, ব্যবস্থাপক হারি জয়নাল আবেদিন ও পরিচালক দক্ষিণ এশিয়া সৈয়দ জাহির উদ্দিন। এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্টি মালয়েশিয়া, চাইনিজ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি, ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও মালে চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির নেতাদের সঙ্গেও বিএমসিসিআই এর প্রতিনিধিদল বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যে এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১১ জুলাই রাজধানী কুয়ালালামপুরে অনুষ্টিত হয়েছিল শোকেস বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে ২০১৮-১৯ সালে মালয়েশিয়ায় রপ্তানি ১৯.৩ শতাংশ, ২৭৭.২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২১-২২ এ বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করেছে ২০২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য।
নতুন উচ্চতায় পৌঁছলেও বাংলাদেশ আমদানি করে ১৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ মালয়েশিয়ার সাথে বাংলাদেশের ব্যাপক বাণিজ্যিক ঘাটতি রয়েছে। কারণ বাংলাদেশ বিপুল অংকের জ¦ালানি তেল, ভোজ্য তেল আমদানি করে। সে হিসেবে বাংলাদেশ বিশেষ সুবিধা পেতে পারে তবে বিষয়টি পণ্যের গুণমান এবং লবিং এর উপর নির্ভর করছে।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button