ডিফল্ট ক্যাটাগরি

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সেপ্টেম্বরে উদ্বোধনের সম্ভাবনা

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধন করা হতে পারে বাগেরহাটের রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। ওই মাসের ৫ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে তিনদিনের সফরে ভারত যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সে সময়ই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ যৌথভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ বিনিয়োগে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) যৌথ কোম্পানি গঠন করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ২০১০ সালে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর পর ২০১২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মূল অবকাঠামো তৈরি করেছে ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড (বিএইচইএল)।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা রয়েছে। এটি চালু হলে এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিড লাইনে সংযুক্ত করার কথা ছিল। কিন্তু এর জন্য যে সঞ্চালন লাইন দরকার সেটি এখনো প্রস্তুত করতে পারেনি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলেও এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা যাচ্ছে না।

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালুর বিষয়ে কয়েক দফা সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করে বিদ্যুৎ বিভাগ। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি চালু করা যায়নি। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে প্রকল্পে ধীরগতি নেমে এলে বাস্তবায়ন আরো বিলম্বিত হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩ মার্চ বিদ্যেকন্দ্রের কয়লা ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্পের কয়লা হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়া প্রস্তুত হলে কয়লা সরবরাহ চালু হবে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে কয়লা চুক্তি বাতিল করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। নতুন করে দরপত্র আহ্বান করার প্রক্রিয়া চলছে। রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে আমদানির জন্য ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার কয়লাকে চূড়ান্ত তালিকায় রাখা হয়েছে। সাশ্রয়ী বিবেচনায় এ তিন দেশের যেকোনো একটি দেশ থেকে দীর্ঘমেয়াদি কয়লা আমদানি চুক্তি করার কথা ভাবছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

অন্যদিকে, শুরু থেকেই সুন্দরবনের কাছে নির্মিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করে আসছিলেন দেশের পরিবেশবাদীরা। সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বারবারই এর বিরোধিতা করেছে। তবে এ প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না বলে শুরু থেকেই দাবি করে আসছে সরকার।

মোদি সরকারের কাছে সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনার ভারত সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের অন্যতম ঢাকা। নানাভাবে দুই দেশের সম্পর্ক এখন আরো গভীর হচ্ছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের আগেই কলকাতা-চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দর রুটে শুরু হয়েছে কার্গো জাহাজের পরীক্ষামূলক চলাচল। এর মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন রূপ পাবে। ৫ আগস্ট প্রথম জাহাজটির কলকাতা থেকে মোংলা বন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে। মোট ১৬ টন লোহার পাইপ নিয়ে জাহাজটি মোংলা পৌঁছবে। এরপর তামাবিল-ডাউকি সীমান্ত হয়ে এসব পণ্য পৌঁছবে আসামে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গম রফতানি অব্যাহত রেখেছিল মোদি সরকার। বাংলাদেশে প্রায় ৬৬ শতাংশ গমের জোগান দেয় ভারত। ভারতের রফতানি অব্যাহত থাকার কারণেই বাংলাদেশে গমের দাম বাড়েনি বলেও প্রতিবেদনগুলোতে উল্লেখ করা হয়।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button