মক্কায় ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখছেন হজযাত্রীরা
এঁকেবেঁকে সিঁড়ি ওপরে উঠে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় সিঁড়ি বেশ খাড়া। কিছু দূর উঠে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসার জায়গা করা হয়েছে। পথে পানি, চা ও ঠান্ডা পানীয় বিক্রি হয়।
সিঁড়ি ধরে উঠতে গিয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থেকে আসা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ‘যখন কোনো রাস্তাঘাট ছিল না, তখন কীভাবে নবীজি (সা.) নিয়মিত এই পাহাড়ের চূড়ার গুহায় যাতায়াত করেছেন। খাদিজা (রা.)-ই বা কীভাবে নবীজি (সা.)-এর জন্য এখানে খাবার দিয়ে যেতেন?’
জাবালে সাওর
জাবালে সাওর কাবা শরিফ থেকে প্রায় তিন মাইল দূরে। জাবাল মানে পাহাড়, সাওর অর্থ গুহা। মক্কা থেকে মদিনায় যাওয়ার পথে শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে হজরত আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে এই পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তিন দিন, তিন রাত তাঁরা এই গুহায় ছিলেন। শত্রুরা খুঁজতে খুঁজতে গুহার খুব কাছে এসেছিল। কিন্তু গুহামুখে মাকড়সার জাল দেখে তারা ফিরে যায়। তবে দর্শনার্থীদের এ পাহাড়ে উঠতে নিষেধ করে একটি সাইনবোর্ড টাঙানো আছে। এরপরও হজযাত্রীরা এ পাহাড়ে ঘুরতে আসেন।
জান্নাতুল মা’আলা
হজযাত্রীরা আরও ঘুরে দেখছেন জান্নাতুল মা’আলা কবরস্থান, মসজিদে জিন। জান্নাতুল মা’আলা মসজিদুল হারামের পূর্ব দিকে অবস্থিত। মক্কার বিখ্যাত কবরস্থান। এখানে কোনো কবর বাঁধানো নয়, কবরে কোনো নামফলক নেই। দায়িত্ব পালনরত এক ব্যক্তি জানান, এখানে রয়েছে বিবি খাদিজা (রা.)-এর কবর। হজে এসে কেউ মারা গেলে আগে এখানে কবর দেওয়া হতো। স্থান সংকুলান না হওয়ায় এখন শারায়া কবরস্থানে (হাজিদের কবরস্থান) দাফন করা হয়।
মসজিদে জিন
জান্নাতুল মা’আলা কবরস্থানের কাছে মসজিদে জিন। সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, জিনরা এখানে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে একাধিকবার এসেছেন। রাসুল (সা.)-এর কণ্ঠে পবিত্র কোরআনের তিলাওয়াত শুনে তাঁর প্রতি ইমান এনেছেন। সুন্দর এই মসজিদে নামাজ আদায় করেন হজযাত্রীরা।
মক্কা জাদুঘর, মক্কা উম্মুল জুদ এলাকায় কাবার গিলাফ তৈরির কারখানা। তার পাশে দুই মসজিদে ব্যবহৃত পুরোনো জিনিসপত্র দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
এসেছেন ৫৩ হাজার ৩৬৭ হজযাত্রী
হজ ফ্লাইট শুরুর পর গতকাল শনিবার পর্যন্ত ১৪৭টি ফ্লাইটে সৌদি আরবে এসেছেন । ৫৩ হাজার ৩৬৭ বাংলাদেশি হজযাত্রী। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আইটি হেল্প ডেস্কের হজের প্রতিদিনের বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১৪ জুলাই। সৌদি আরবে এসে এ পর্যন্ত ইন্তেকাল করেছেন ১১ হজযাত্রী। তাঁদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী হজযাত্রী।