প্রবাসহাইলাইটস

মর্যাদাপূর্ণ সন পদক পেলেন বাংলাদেশের মেরিনা

বিজয়ী লন্ডনে একটি বিশেষ বার্ষিক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন, যা পরে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করে। এ ছাড়া ১৮৩৫ সালে আর্কিটেক্টস অব ইংল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্যার জন সন যে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন, তার একটি প্রতিরূপ (রেপ্লিকা) তাঁকে দেওয়া হয়।

ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী, স্থপতি ও চিন্তাবিদ মেরিনা তাবাশ্যুম এ বছর সন পদক জিতেছেন। তিনি তাঁর কাজ ও জীবন সম্পর্কে সন জাদুঘরে বক্তৃতা করেন। এরপর স্যার ডেভিড চিপারফিল্ডের সভাপতিত্বে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সনের ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, মেরিনা প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবন নকশা করার চর্চার ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে নকশা স্থায়িত্বের চ্যালেঞ্জ নিতে পারে এবং গ্রহের ওপর আমাদের সামষ্টিক প্রভাব পড়ে। স্থপতি হিসেবে তিনি প্রশংসিত। এ ছাড়া তিনি নিজের সম্প্রদায়ের জন্য নিবেদিত শিক্ষক ও চ্যাম্পিয়ন।

পুরস্কার জেতার প্রতিক্রিয়ায় মেরিনা বলেন, ‘প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটা কৌতুক। আগের বিজয়ী রাফায়েল মনেও, ডেনিস স্কট ব্রাউন ও কেনেথ ফ্রাম্পটনের তুলনায় আমার কাজ এখনো চলমান। এখনো অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি।’

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য বর্ষা বর্ণনাতীত যন্ত্রণার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে অপ্রত্যাশিত আনন্দ বয়ে আনে।

প্রতিবছর জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে যেখানে দেশের তিনটি প্রধান নদী একত্র হয়, সেখানে পানি ফুলেফেঁপে উঠে নদীর দুই কূল ছাপিয়ে যায়। এতে বিপর্যয়কর বন্যার সৃষ্টি হয়। হিমালয় থেকে প্রবল হিমবাহের প্রবাহের সঙ্গে যুক্ত হয় প্রবল বৃষ্টিপাত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈশ্বিক উত্তাপের কারণে হিমবাহ গলে যাওয়ার হার আরও বেড়েছে। তীব্র বন্যায় রাতারাতি ঘরবাড়ি ও জীবিকা হারিয়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় পলি জমে সৃষ্টি হয় নতুন ভূমি, যাকে বলা হয় ‘চর’।

সন পদক জয়ী মেরিনা তাবাশ্যুম বলেন, ‘একে সত্যিকার অর্থে ভূমি বলা চলে না। এটা ভেজা। এটা নদীর অংশ। কিন্তু ভূমিহীনদের জন্য কয়েক বছরের পরিত্রাণ হয়ে ওঠে এসব চর। এগুলো তাদের মাছ ধরার, চাষাবাদ করার ও পরিবার নিয়ে থাকার সুযোগ দেয়।’

মেরিনা গত বছর করোনা মহামারির শুরু থেকে বদ্বীপ অঞ্চল নিয়ে কাজ শুরু করেন। একজন স্থপতির দক্ষতা ওই অঞ্চলে কোনো ভূমিকা রাখতে পারে কি না, তা পুনর্মূল্যায়ন করেন তিনি। বিধিনিষেধের কারণে অনেকে চাকরি হারান। অনেকে নতুন করে গৃহহীন হয়ে পড়েন। অগণিত বদ্বীপবাসীকে অস্থায়ী তাঁবুর নিচে আশ্রয় নিতে হয়।
গত বছর তাবাশ্যুম এবং তাঁর দল ভূমিহীন চরের বাসিন্দাদের জন্য কম খরচের ‘মডুলার হাউস কিট’ তৈরিতে কাজ শুরু করেন।

গত বছর ব্রিটিশ সাময়িকী প্রসপেক্টের ৫০ চিন্তাবিদের মধ্যে শীর্ষ ১০-এ স্থান করে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের এ স্থপতি। তিনি ১০ জনের মধ্যে তৃতীয় হন। সেখানে মেরিনা তাবাশ্যুম সম্পর্কে বলা হয়, ‘তিনি মনোনিবেশ করেছেন এক বাস্তব সমস্যার দিকে। আর সেটি হলো জলবায়ু পরিবর্তন। এর ফলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে সে উপযোগী ঘরবাড়ি তৈরির নকশা করেছেন।’

ঢাকার দক্ষিণখানে বায়তুর রউফ নামের একটি শৈল্পিক নকশার মসজিদের জন্য ২০১৮ সালে স্থপতি হিসেবে জামিল প্রাইজ পান মেরিনা তাবাশ্যুম। এর আগে একই নকশার জন্য ২০১৬ সালে তিনি সম্মানজনক আগা খান পুরস্কার পান। সুলতানি আমলের স্থাপত্যের আদলে নকশা করা এ মসজিদ ২০১২ সালে ঢাকায় নির্মিত হয়।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button