আইএমডিবিতে ‘গডফাদার’কে টপকে শীর্ষে ‘জয় ভীম’
বিশ্ব চলচ্চিত্রের অনলাইন তথ্যভাণ্ডার ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজ (আইএমডিবি)। মুক্তি পাওয়া কয়েক লাখ সিনেমার খুঁটিনাটি তথ্য রয়েছে এতে। সম্প্রতি আইএমডিবির দর্শক রেটিংয়ের শীর্ষে থাকা দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন ও দ্য গডফাদারের মতো সিনেমাকে টপকে শীর্ষে পৌঁছে গেছে তামিল ভাষায় নির্মিত সিনেমা ‘জয় ভীম’। সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে।
চলতি বছর মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি আইএমডিবির ইউজার রেটিংয়ের সেরা ১ হাজার ১৯৪টি সিনেমার তালিকায় ৯ দশমিক ৬ পয়েন্টে নিয়ে শীর্ষে রয়েছে। যেখানে দীর্ঘদিন শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখা ক্ল্যাসিক সিনেমা দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশনের ইউজার রেটিং এখন ৯ দশমিক ৩। এর পরেই রয়েছে ১৯৯২ সালের সিনেমা মাফিয়া আখ্যান দ্য গডফাদার, যার ইউজার রেটিং ৯ দশমিক ২।
২ নভেম্বর ডিজিটাল প্লাটফর্ম অ্যামাজন প্রাইমে মুক্তি পেয়েছে জয় ভীম। সিনেমার মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তামিল সুপারস্টার সুরিয়া। পুলিশ হেফাজতে থাকা স্বামীকে নিখোঁজ ঘোষণার পর আদিবাসী এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর করা মামলা নিয়ে এক আইনজীবীর লড়াই দেখানো হয়েছে সিনেমায়। এটি লিখেছেন সাংবাদিক আসীম ছাবরা।
সিনেমার শুরুতে দেখা যায়, দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে সন্দেহভাজন কয়েকটি দলকে আলাদা করছেন পুলিশ অফিসাররা। এখানে একদলকে প্রভাবশালী সম্প্রদায় চলে যেতে বলছে, অন্য দলিত সম্প্রদায়ের লোকদের ফিরে যেতে বলছে। পরে পুলিশ দ্বিতীয় গ্রুপের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে।
আরো দেখা যায়, গ্রামের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে ভীরু পুরুষরা, যারা তাদের ভাগ্য সম্পর্কে সচেতন। সিনেমায় মূলত দেখানো হয়েছে প্রতিনিয়ত নির্যাতন-নিপীড়ন ঘটতে থাকা ভারতের এসব প্রান্তিক মানুষের জীবন, বিশেষ করে দলিত এ সম্প্রদায়ের জীবন কতটা অনিশ্চিত।
ভারতে মোট জনসংখ্যার মাত্র শতকরা ২০ ভাগ মানুষ দলিত সম্প্রদায়ের। তাদের সুরক্ষায় আইন থাকলেও বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে নিম্নবর্ণের এ হিন্দুরা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন তামিল সিনেমাগুলোয় তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতারা দলিত সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের নানা গল্প তুলে ধরছেন।
চলচ্চিত্র ইতিহাসবিদ এস থিওডোর বাসকারান বলেন, তামিলনাড়ুতে ৩০ বছর ধরে দলিত সম্প্রদায়ের আন্দোলন দানা বেঁধে উঠছে। ১৯৯১ সালে বি আর আম্বেদকরের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের মধ্য দিয়ে এ আন্দোলন শুরু হয়।
দলিত নেতা ও বুদ্ধিজীবী বি আর আম্বেদকারের অনুসারীদের মাধ্যমে জয় ভীম বা ‘ভীম দীর্ঘজীবী হোক’ স্লোগানটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তিনি ছিলেন ভারতের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান এবং দেশটির প্রথম আইনমন্ত্রী।
সূত্র: বিবিসি