অর্থনীতিহাইলাইটস

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক আমদানি বেড়েছে ২৬.৩৭%

জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০২১

655বাংলাদেশের মোট রফতানি পণ্যের সিংহভাগই তৈরি পোশাক। একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এ পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক আমদানি বেড়েছে ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের অধীনস্থ অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (ওটিইএক্সএ) পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৫০০ কোটি ৩২ লাখ ৭৭ হাজার ডলারের পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি গত বছরের একই সময়ে আমদানি করে ৩৯৫ কোটি ৯৩ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পোশাক। এ হিসেবেই আমদানি বেড়েছে ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৫৯২ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছিল। ২০২০ সালে কভিডের প্রভাবে আমদানি কমে যায়। গত বছর মার্কিন বাজারে পোশাক আমদানি হয় ৫২২ কোটি ডলারের। এ হিসেবে ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানি কমেছিল ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ।

গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পোশাক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ক্রয় পূর্বাভাস-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। ‘২০২১ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বেঞ্চমার্কিং স্টাডি’ শীর্ষক ওই জরিপ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি বাণিজ্যের গতি এখনো দুর্বল। পাশাপাশি শিল্পের সামাজিক ও শ্রম কমপ্লায়েন্স ব্যবস্থাপনায় এখনো ঝুঁকি দেখছেন তারা। তবে সোর্সিং কস্ট বা পণ্য ক্রয়বাবদ ব্যয় বিবেচনায় বাংলাদেশ এখনো আকর্ষণীয়। মূলত মূল্য সুবিধায় পণ্য কিনতেই ঝুঁকি সত্ত্বেও বাংলাদেশমুখী রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক পণ্যের ক্রেতারা।

মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলো আগামী দুই বছর বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পোশাক ক্রয়ে আগ্রহী উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ার অন্য দেশগুলোর চেয়ে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ উল্লেখযোগ্য মূল্য সুবিধা দিতে পারে। তবে কভিড-পরবর্তী বিশ্বে পোশাক পণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য ঘাটতি ভোগাতে পারে বাংলাদেশী সরবরাহকারীদের। জরিপে দেখা গেছে, চলমান কভিডে ক্রেতাদের পণ্য চাহিদায় পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন মৌলিক পণ্যের চেয়ে সোয়েটার, স্মক ড্রেস, সোয়েটপ্যান্টের মতো পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। নতুন এসব চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি সফল ভিয়েতনাম। ফলে কভিড-পরবর্তী বিশ্বে মার্কিন ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর কাছে বাংলাদেশের ভূমিকা এবং অবস্থান আরো গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারক শিল্প-কারখানার মালিক সংগঠন প্রতিনিধিরা বলছেন, আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় বৃদ্ধির বিষয়ে যে পূর্বাভাস মার্কিন ক্রেতা প্রতিনিধিরা দিয়েছেন তা অস্বাভাবিক নয়। যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পোশাক আমদানির পরিসংখ্যানে। চলতি অর্থবছর শেষেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশও হতে পারে বলে প্রত্যাশা ছিল। মার্কিন পরিসংখ্যানে ছয় মাসেই ২৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি তাই বেশ আশাব্যঞ্জক।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, মার্কিন ক্রেতাদের জন্য বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমেই আরো বাড়বে বলে আমরা মনে করি। আমাদের হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরে দেশটিতে রফতানি প্রবৃদ্ধি ২৫ শতাংশও হতে পারে। ফলে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ থেকে বেশি পণ্য ক্রয়ে মার্কিন ক্রেতাদের আগ্রহ স্বাভাবিক।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button