রাজনীতি

চৌমুহনীতে হিন্দুদের ওপর হামলা: লজ্জিত ওবায়দুল কাদের

896532.নোয়াখালীর চৌমুহনীতে হিন্দুদের ওপর হামলার সময় সেখানকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা নিরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল কী না এমন প্রশ্ন রেখেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে তিনি নিজে দুঃখ ও লজ্জা পেয়েছেন বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে ভার্চুয়ালি হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা চৌমুহনীতে ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।

নোয়াখালীর দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, চৌমুহনীতে গত ১২ বছর এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। এবার তাণ্ডবটা কেন হলো, কিভাবে হলো, আমি সেখানকার নেতৃবৃন্দের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই। যে কুমিল্লায় যখন ঘটেছে, এতগুলো পূজামণ্ডপ চৌমুহনীতে, আপনারা কেন সতর্ক হলেন না।

‘ভোট আসলে হিন্দুদের কাছে গিয়ে আমরা যারা মায়াকান্না করি, হিন্দু দরদ দেখাই। হিন্দুদের বিপদের সময় আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি কেন? এ প্রশ্ন আপনাদের প্রত্যেকের বিবেকের কাছে আমি রেখে গেলাম।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের এত বড় সংগঠন এত কর্মী বাহিনী। কুমিল্লার ঘটনার পরদিন, চৌমুহনীর ঘটনা ঘটেছে। যদি কঠোরভাবে সতর্কতা আপনারা অবলম্বন করতেন, আওয়ামী লীগ সতর্ক থাকলে এদের এত দুঃসাহস হতো, এ রকম তাণ্ডপ চৌমুহনীতে তারা করে গেল। সব কিছু প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে থাকলে হয় না বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সেখানে ২টি প্রাণহানি ঘটলো। আমাদের বিবেক কি আলোড়িত হচ্ছে না। আমি বলবো, আমরা আমাদের দায়িত্বপালনে ব্যর্থ হয়েছি। সেটা নিজেরা খুঁজে বের করুন। এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে আপনাদের সতর্কতার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। যে কোন অবস্থায় দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দেন তিনি।

‘এতগুলো মণ্ডপ চৌমুহনীতে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিলো আপনারা কি নিরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। একটা প্রতিরোধও তো হলো না, এটা নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আমি নিজে লজ্জা পেয়েছি। কি জবাব দেব আজকে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে।

তিনি বলেন, ঘটনার পর পরই স্বপনকে (আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন) পাঠিয়েছি, সুজিত, সেলিম, অসীম ও ১৪ দলের নেতারা গেছেন। আমি শারীরিকভাবে ডাক্তারের পরামর্শ মত চলছি। যে কারণে আমি ঢাকার বাইরে যাচ্ছি না। তা না হলে আমি অবশ্যই ছুটে যেতাম। চৌমুহনী, কুমিল্লা, হাজীগঞ্জ, আমার যাওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু নেত্রী বললেন, নেতৃবৃন্দকে পাঠাও আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।

ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বেগমগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ আপনাদের সঙ্গে আছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার মুখে নয় অন্তরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিতে বিশ্বাস করে। শেখ হাসিনা আপনাদের আপনজন। এ ঘটনায় সরকার আপনাদের সঙ্গে আছে, এ কথা আপনাদের আশ্বস্ত করছি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। সঞ্চালন করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button