প্রবাসহাইলাইটস

অভিবাসন প্রত্যাশী ৮১৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে জার্মানি

862জার্মানিতে নানাভাবে অনুপ্রবেশ করা ও অবৈধভাবে বসবাসরত আটককৃত ৮১৬ জন অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বার্লিনের বাংলাদেশ দূতাবাস। দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জার্মানির চাপে নানা কারণে অবৈধ হয়ে পড়া এসব বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে হচ্ছে। যাদের ফেরত পাঠানো হবে তাদের সব তথ্য ইতোমধ্যে দেশটির একটি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৬ অক্টোবর প্রায় অর্ধশত অভিবাসনে ব্যর্থ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশ স্ট্যার্ন্ডাড অপারেটিং প্রসিডিওর (এওপি) নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর মাধ্যমে অবৈধদের ফেরত নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।

জার্মানিতে অভিবাসন প্রত্যাশী ৮১৬টি কেস পাওয়ার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এর মধ্যে ৭১৭টি কেস বাংলাদেশে স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) ভ্যারিফাইড করে দিয়েছে। যার মধ্যে তারা এ পর্যন্ত ৪৫০টি ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করেছেন। ৪২১টি কেস রিজল্ভ ও আরো ৩৬৭টি কেস আন রিজল্ভ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

অবৈধদের ফেরত পাঠানোর দিনে সব ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিমানে সফরসঙ্গী হতে কমপক্ষে জার্মানির ১৫০ জনের বিশেষ একটি বাহিনী বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ভিসা নিয়েছেন। ফেরত পাঠানোর পুরো বিষয়টি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানোর বিষয়টিও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত।

অবৈধদের যেভাবে পাঠানো হবে দেশে

রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া জানান, অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের দেশে ফেরত পাঠানোর আগে আইডেন্টিফাই করা হবে। যখন নিশ্চিত হবে ওই অভিবাসন  প্রত্যাশী বাংলাদেশি তাকে ট্রাভেলড ডকুমেন্ট দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, অন্যান্য ইউরোপিয় দেশের পাশাপাশি জার্মানিতে চিহ্নিত অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানো যে প্রক্রিয়া আছে, তাতে আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু সুযোগ দেই, যাতে তারা অন্য কোনো দেশে চলে যায় এবং সেখানে বসবাস করতে পারে। এতে করে তাদেরকে আর ফেরত পাঠানোর প্রয়োজন হবে না।

কিন্তু, যারা সে সুযোগ নিতে পারেননি বা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেছেন, তাদের একটা নির্ধারিত এরিয়ার মধ্যে রাখা হয়েছে। তারা বেকার ভাতা বা সোশ্যাল সিকিউরিটি পাচ্ছেন। এদের ফেরত পাঠাতে যেহেতু আমরা চুক্তিবদ্ধ; তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। দেশের পুলিশ, এনএসআই, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, হোম মিনিস্ট্রি, ফরেন মিনিস্ট্রির কমিটি আছে, সেই কমিটি যাচাই করে ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনকে (আইওএম) জানায়। তারা আবার এদেরকে রিটার্নিং কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আরসিএমএস) পদ্ধতিতে আপলোড করে। এরপর দূতাবাস তাদের দেশে ফেরার অনুমতি দেয়।

দীর্ঘদিন ধরে দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে আটক অভিবাসন প্রত্যাশী এসব অবৈধ বাংলাদেশিদের কারণে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কহানীর বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, অবৈধদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক নানা বিষয় চিন্তা করে এতদিন তাদেরকে ফেরত পাঠানো যায়নি। ইইউ ও জার্মানির কাছ থেকে তাদের সমস্ত তথ্য উপাত্ত হাতে আসার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। দু’দেশের মধ্যে চলমান সম্পর্ক আরো জোরদার করতেই কঠিন এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

দেশের অভিবাসন প্রত্যাশী তরুণদের উদ্দেশ্য জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আদম-ব্যাপারীদের খপ্পরে পড়ে নানা দেশ ঘুরে অবৈধ পথে আর নয় বরং উচ্চশিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে জার্মানিতে নিরাপদ অভিবাসন এখন অনেকটাই সহজ।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button