দেশের পর্যটন এলাকাগুলোতে বিদেশী পর্যটকদের জন্য ‘ডেডিকেটেড ক্যাসিনো’সহ তাদের বিনোদন উপযোগী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রেখে স্থাপনা নির্মাণের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। গতকাল সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, মাহবুব-উল আলম হানিফ, মির্জা আজম, মুহিবুর রহমান মানিক ও নাহিদ ইজাহার খান বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ বলেন, বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য আমরা একটি এক্সক্লুসিভ জায়গা নির্ধারণ করে বিদেশীদের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা রাখার ব্যবস্থা করতে বলেছি। আমাদের এখানে অনেক বিদেশী ক্রেতা আসেন। কিন্তু বিদেশীদের জন্য আমাদের এখানে বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশেই বিদেশী পর্যটকদের বিনোদনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। আমরাও চাই, আমাদের দেশে বিদেশী পর্যটক আসুন। তারা তাদের মতো করে ওই নির্ধারিত এলাকায় ঢুকবেন। সেখানে বাংলাদেশের কোনো লোক যেতে পারবে না। সারা বিশ্বে যে ধরনের সুযোগ দেয়া হয় তাদের জন্য সেসব সুযোগ সেখানে থাকবে। এতে বাংলাদেশকে মানুষ চিনতে পারবে।
এদিকে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২৩ হাজার। এ সময় অভ্যন্তরীণ পর্যটকের সংখ্যা ছিল এক কোটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৪০ সাল নাগাদ পাঁচ লাখ আবাসন সুবিধার সুযোগ তৈরি, ১০ মিলিয়ন বিদেশী পর্যটক আগমন এবং ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়কে সামনে রেখে ট্যুরিজম বোর্ড একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করছে।
কক্সবাজারের পর্যটন করপোরেশনের মোটেল শৈবাল, প্রবাল ও উপলকে একত্র করে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে আধুনিক, আকর্ষণীয় এবং উন্নত সুযোগ-সুবিধা সংবলিত পর্যটন স্থাপনা তৈরি এবং বৈঠকে কুয়াকাটার পর্যটন এলাকা সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে অগোছালো স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে আধুনিক, আকর্ষণীয় এবং উন্নত সুযোগ-সুবিধা সংবলিত পর্যটন স্থাপনা তৈরির সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি জানান, কক্সবাজারের তিনটি মোটেলে মোট সাড়ে ১৫ একর জমি। এগুলোর অবস্থানও একেবারেই সৈকতের কাছে। কিন্তু মোটেল তিনটিতে সেই ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেই। বেশির ভাগ রুমগুলো নন এসি। পর্যটকরা সেখানে থাকতে চান না। এজন্য আমরা তিনটি মোটেলকে একত্র করে বড় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সংবলিত স্থাপনা তৈরির সুপারিশ করেছি।
কুয়াকাটা নিয়ে তিনি বলেন, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতটিও দেশের অনন্য। এখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। পদ্মা ব্রিজ উদ্বোধন হলে ঢাকা থেকে সেখানে যেতে মাত্র সাড়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লাগবে। সেখানে ছয় মাসের মধ্যে এমন স্থাপনা তৈরি হোক, যাতে করে পাঁচ হাজার লোক থাকতে পারে—তাদের সেই নির্দেশনা দিয়েছি।