সেই কবে থেকে আফগানিস্তান এর গল্প শুনছি । ৪০ বছর এবং সতত পরিবর্নতনশীল আফগান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। শোনা যায় আলেকজান্ডার বাধ্য হয়ে রোখশানাকে বিয়ে করেছিলেন এই আফগান এলাকায় , আমাদের প্রজন্মের দেখা এখন পর্যন্ত দুইটা পরাশক্তি এখান থেকে বিতাড়িত। মাত্র দুইটা মুসলিম প্রধান দেশ সম্পূর্ণ উপনিবেশ এর কবলে পরেনি , তার একটা এই আফগানিস্তান। আহমদ শাহ দুররানি এদের এক করার চেষ্টার পর আবার বিভক্ত হয়ে পরে এই আফগান গোত্র সমূহ । গত ৪০ বছর এই বিভাজন বেড়েছে। শুধু এখন ইতিহাসের একটা বিশেষক্ষণ। এ সময়ের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটি এখন একসময়ের অত্যন্ত বিরোধী তালেবানের সঙ্গে এক সঙ্গে বসে আলাপ করে শান্তির জন্য।
এই পর্যন্ত অগ্রগতি আর সর্বশেষ যে শহরে তারা প্রবেশ করছে সেগুলোর অবস্থা এখন কেমন?
আজ এখন পর্যন্ত ১৭ টা প্রভিন্স তালেবানের হাতে চলে গেছে । অবাক করার বিষয় হচ্ছে কয়েকটা প্রদেশ কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই পেয়ে গেছে । এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটো শহর হচ্ছে কান্দাহার এবং হেরাত। হাজার বছরের পুরাতন শহর এগুলো। আফঘানিস্তানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম শহর।
কান্দাহার দখল নিয়ে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ নির্দশনা তালেবানরা দিয়েছে এরই মধ্যে। সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তাদের কাজে যোগদান করতে বলেছে। জবজীবন স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। মসজিদ গুলো শুক্রবার নামাজ স্বাভাবিক ভাবেই আদায় হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তালেবান নেতৃত্ব জেনারেল রাজিক এর কবর এর নিরাপদ রাখতে বলেছে। এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ যে জেনেরাল রাজিক ছিলেন অত্যন্ত কঠোর তালিবান বিরোধী এবং তালিবান কে কান্দাহার এ পর্যুদস্ত করে রেখেছিলেন। এইটা একটা আপোষমূলক মনোভাব।
হেরাত এর অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা ইসমাইল খান , তাকে যখন তালিবান নিয়ে যায় তখন কোনো রকম উস্কানি বা অসম্মানজনক আচরণ করিনি । তাকে যখন সাংবাদিকগণ জিজ্ঞাসা করেন যে তিনি কি অন্য প্রদেশ এর লোকজন কে আত্মসম্পর্পন করতে বলেন কি না । তিনি উত্তরে বলেন আমরা আসলে পরস্পরের ভাই এবং আমাদের শান্তি রক্ষা করতে হবে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে থাকতে হবে। যারা ঐসব শহরে আছেন তাদের দুই একজনের সঙ্গে কথা বলে যা বোঝা যাচ্ছে যে তাঁরা উদ্বিগ্ন না । স্বাভাবিক জীবন যাপনের চেষ্টা করছে এখন পর্যন্ত।
এসব দেখে মনে হচ্ছে সরকার ও তালেবানের মধ্যে একটা বোঝাপড়ার চেষ্টা হচ্ছে। তালেবান যদি লোগার ও আরও দুই একটা শহর পায় তাহলে অনেকটা ৫০/৫০ ভারসমমো হয়ে যাবে ।
দেখার বিষয় হচ্ছে তালেবানের পরবর্তী কার্যয়বলী । এদিকে আমেরিকা ও UK কিছু সেনা পাঠাচ্ছে কাবুল এ । যদিও বলছে নাগরিকদের সেফ এক্সিট এর জন্যে কিন্তু তারপরেও একটা চাপ তো তৈরী হচ্ছে তালেবানের উপর । আগামী কয়েক সপ্তাহ পর সম্পূর্ণ অবস্থার একটা চিত্র এসে যাবে। ভবিষ্যৎ আফগানিস্তান কোন পথে এগোবে। (চলবে)