হিরো অফ দি ডে

কাস্টমারের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারলেই লাখপতি : সুইটি

কাস্টমারের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারলেই লাখপতি : সুইটিহারবাল হেয়ার অয়েল, অর্গানিক মেহেদি গুঁড়ো, হারবাল হেয়ার প্যাক, ফেস প্যাক, বিভিন্ন প্রকার হার্বস, যেমন—আমলকি, রিঠা, শিকাকাই, মুলতানি মাটি, চন্দন, মেথির গুঁড়ো, নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল প্রভৃতি অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করেন ফারহানা ইয়াসমিন সুইটি। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করছেন পরিবারের সদস্যরা। এরই মধ্যে লাখপতি বনে গেছেন সুইটি। তাঁর অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান—বি ন্যাচারাল। সুইটির ভাষ্যে, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নাম বি ন্যাচারাল। আমার পেজের যাত্রা শুরু হয় ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। সৌন্দর্যসচেতন প্রত্যেক মানুষ চায় ত্বক ও চুলের যত্ন নিতে, আর এ জন্য আছে বিভিন্ন প্রকার ত্বক ও চুলের প্রসাধনসামগ্রী। কিন্তু আমরা যে সব প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার করে থাকি, তার বেশির ভাগই তৈরি হয় বিভিন্ন রাসায়নিক দিয়ে, যা সাময়িকভাবে ত্বকের ও চুলের উপকার করলেও দীর্ঘ সময়ে এর সাইড ইফেক্ট দেখা যায়। আর এখান থেকে আমার ব্যবসায়ের শুরু।’

সুইটি আরও যুক্ত করেন, ‘আমি চেয়েছিলাম এমন কোনও কিছু তৈরি করতে, যা ত্বক ও চুলের ক্ষতি না করে উপকার করবে; কোনও প্রকার সাইড ইফেক্ট দেখা দেবে না। আমাদের নানি, দাদি ও মায়েদের সময়ে ত্বক ও চুলের যত্ন নিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘরোয়া বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা হতো অথবা ভেষজ উপাদান ব্যবহার করতেন তাঁরা। প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদান দিয়ে ত্বক ও চুলের যত্ন করার কারণে দেখা যায়, তাঁদের ত্বক ও চুল তুলনামূলকভাবে অনেক সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান। বর্তমানে ব্যস্ত সময়ে এ সব প্রাকৃতিক উপাদান হাতের নাগালে থাকার পরেও দেখা যাচ্ছে এগুলো তৈরির ঝামেলা অনেকেই পোহাতে চায় না। যে কারণে আমাদের নির্ভর হতে হয় কেমিক্যাল প্রোডাক্টের ওপর। আমি চেয়েছি এ সব প্রাকৃতিক উপাদানকে একদম ঘরোয়া ভাবে ব্যবহার উপযোগী করে কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দিতে। আর এই উদ্দেশ্য নিয়েই আমার পেজের যাত্রা শুরু।’

পরিবার থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? ফারহানা ইয়াসমিন সুইটি বলেন, ‘একজন নারীর এগিয়ে যাওয়ার পেছনে পরিবারের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার সাহস জোগালে অনেক কঠিন সময় অথবা কাজ সহজ হয়। নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি যে আমি এমন পরিবার পেয়েছি। আমার উদ্যোগের প্রতি পরতে পরতে আমার পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা জড়িয়ে আছে। যেখানে আমার স্বামী সাহায্য করছেন প্রোডাক্ট সোর্সিং ও ডেলিভারিতে। অন্যদিকে আমার মা, বোন,ভাই সাহায্য করেন প্যাকেজিংয়ে অথবা পেজ মডারেশনে। আমি কৃতজ্ঞ তাঁদের প্রতি।’

 একজন ক্রেতা কেন আপনার পণ্য কিনবে বলে মনে করেন? সুইটি বলেন, ‘ঘরোয়া উপাদান দিয়ে রূপচর্চা কমবেশি আমরা সবাই করি। সমস্যা হয়ে যায় এগুলো তৈরি করে ব্যবহার করার ঝামেলা অনেকে পোহাতে চায় না। কিন্তু এ সব উপাদানের উপকারিতা অনেক এবং দীর্ঘমেয়াদে ভালো ফল পাওয়া যায়। আমি চেয়েছি এ সব উপাদান হাতের নাগালে এনে সহজেই ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। আর এ সব উপাদানের উপকারিতা সম্পর্কে মানুষকে জানানো। আমাদের পেজে ট্রায়াল প্যাকের ব্যবস্থা আছে, যাতে কাস্টমার ট্রায়াল প্যাক ব্যবহার করে বুঝতে পারে কোনটি তাঁর ত্বক ও চুলের সাথে মানানসই। আর যেহেতু এখানে প্রাকৃতিক বিভিন্ন হার্বস ব্যবহার করা হয়, তাই কোনও সাইড ইফেক্ট নেই।’

উই-এর (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) ফেসবুক গ্রুপ সুইটির উদ্যোক্তা-জীবনকে প্রভাবিত করেছে। উই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি যে সময় উই-কে খুঁজে পাই… তখন আমি সদ্য মা হয়েছি, প্রেগন্যান্সির কারণে উদ্যোগের সাথে আমার একটা বড় গ্যাপ পড়ে যায়, যার প্রভাব আমার বিক্রির ওপর পড়ে। ওই সময় উই প্ল্যাটফর্মকে আমি পাই। উই-এ অ্যাকটিভ থাকার মাধ্যমে বিভিন্ন কোর্সের সুযোগ পাই, পাশাপাশি আমার পেজেও অর্গানিক কাস্টমার পাই প্রচুর। আলহামদুলিল্লাহ।’

সুইটি জানান, তিনি অর্থনীতি বিষয়ে ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন। একটি স্বনামধন্য ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে। বর্তমানে তিনি উদ্যোগের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত আছেন।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button