ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে

তিস্তা হয়ে উঠতে পারে এশিয়ান সুয়েজ ক্যানাল

tista৪০০মিটার লম্বা ও ৫৯মিটার চওড়া ২ লক্ষ টন ওজন গ্রহণে সক্ষম ২০১৮ খ্রিঃ নির্মিত এবং পানামা পোর্টে নিবন্ধিত এভারগ্রিন কোম্পানীর তাইওয়ানিজ জাহাজ এভারগিভেন গত মার্চে মাসের ২৪ তারিখ প্রচন্ড এক দমকা বাতাসের কবলে পড়ে আড়াআড়ি ভাবে সুইজ ক্যানালটি ব্লক করে দেয়। ফলে দুই পাশে শতাধিক জাহাজ থেমে যায় অনেকটা যেন ঢাকার রাস্তার যানজটের মতো। ২০ ফুট লম্বা ২০ হাজার কনটেইনার ধারনে সক্ষম দৈত্যের মতো এই জাহাজটিতে চারটি ফুটবল মাঠ থাকতে পারে। বিশ্ব বানিজ্যের ১২% পণ্য পরিবহন করে থাকে আর্টারীর মতো সুয়েজ ক্যানাল- প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০টি জাহাজ এবং গত বছর ১৯ হাজার জাহাজ অতিক্রম করেছে এই ক্যানালটি দিয়ে।
মিশরীয় এই মনুষ্য নির্মিত আন্তর্জাতিক জলপথ ১৯০কিমি দীর্ঘ এবং ২০৫মিটার প্রসস্হ এবং ২৪ মিটার গভীর সুয়েজ ক্যানাল লোহিত সাগরকে ইসথমাস এর বুক চিড়ে যেমন ভূমধ্যসাগরের সাথে যুক্ত করেছে তেমনি আফ্রিকা ও এশিয়া এই দুটি মহাদেশকেও ভাগ করে রেখেছে। ১৮৫৯-১৮৬৯ খ্রিঃ মিশরের অটোমান সম্রাটদের শাসনামলে দশ বছর লেগেছে খালটি খুড়ে দুটি সমুদ্রকে জুড়ে দিতে। ফরাসি প্রকৌশলী Ferdinand de Lesseps কোম্পানি ১৭ নভেম্বর ১৮৬৯খ্রিঃ কাজটি শেষ করেন এবং ১৯৫৬খ্রিঃ পর্যন্ত পরিচালনা করেন। তখন থেকে উত্তর আটলান্টিক এবং ভারত মহাসাগরের জাহাজগুলো দক্ষিণ আটলান্টিক ও দক্ষিণ ভারতীয় জলপথ পরিত্যাগ করে সোজা উত্তর আটলান্টিক ও লোহিত সাগরে ঢুকে ১০ হাজার কিমি পথ সাশ্রয় করে ৮দিন আগেই লন্ডনে পৌছে যায়। সেদিনের সেই ১৬২ বছর আগের ম্যানুয়াল সুয়েজ ক্যানালটি ২০১৫খ্রিঃ মিশর সরকার ৯ বিলিয়ন আমেরিকান ডলার ব্যয় করে অত্যাধুনিক একটি জলপথে রুপান্তর করেছেন। বৈশ্বিক কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার সংযোগ-সেতু হিসেবে বিবেচিত হয়। এশিয়ার দুই বৃহৎ দেশের মধ্যখানে বাংলাদেশের অবস্থান, যার একটি উদীয়মান ভারত। অন্যটি হলো চিন, যা ইতিমধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
তিস্তা নদীর পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্হাপনা বিষয়ক ৯টি প্রোজেক্টে বাংলাদেশ চিনের কাজ থেকে ৬.৪ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে বলে শোনা যায়। হিমালয়ের চুনথাং থেকে উৎপন্ন হোয়ে সিকিম এবং উত্তরে পশ্চিমবঙ্গের আধা ডজন জেলা অতিক্রম করে বাংলাদেশে ২৮০০ বর্গ কিমি স্হান দখলে রেখেছে তিস্তা। তিস্তা রিভার কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট এনড রেসটোরেসন প্রোজেক্ট এর জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮৩.২৭ মিলিয়ন ডলার, চিন দেবে ৮৫৩.০৫মিলিয়ন ইউএস ডলার ঋণ সহায়তা। বাকিটা বাংলাদেশ সরকার বহন করবেন। কাজটি সম্পন্ন করবেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। ৩১৫ কিমি দীর্ঘ তিস্তার ১১৩ কিমি প্রবাহিত হয় বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে যা কোথাও .৭০ কোথাও বা ৫.৫ কিমিঃ চওড়া আর এর গড় গভিরতা ৩.১ কিমি। বাংলাদেশ ১৯৯৬ খ্রিঃ ভারতের সাথে চুক্তির আলোকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্সা না পেয়ে চিনের সহায়তায় একটি মেগা প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে। সে সময় চিনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ঝিজিনপিং অত্যন্ত সাদরে তা গ্রহন করেন এবং অনুমোদনের আশ্বাস দেন, এটা সেটাই।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button