কুমিল্লার মুক্তা এখন খাদিরানি
পড়াশোনা এখনো শেষ হয়নি ‘খাদিরানি’খ্যাত মুক্তা আক্তারের। এর মধ্যে বনে গেছেন লাখপতি। শুধু খাদি কাপড় নিয়ে কাজ করেন। তবে খাদির বিভিন্ন ফিউশন, যেমন—শাড়িতে ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট এবং সুই-সুতার কাজ করেন এবং ফেসবুক মাধ্যমে বিক্রি করে এই অবস্থানে এসেছেন তিনি। মুক্তা আক্তারের পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, শাল, কুর্তি, ব্যাগ ইত্যাদি। এখন খুব ব্যস্ততা যাচ্ছে মুক্তার। সামনে বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস। আর ঈদের প্রস্তুতি তো রয়েছেই। অল্প সময়ে নিজের উদ্যোগ নিয়ে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছেন মুক্তা। পড়াশোনাও করছেন। কাজ করতে করতেই শিখছেন অনেক কিছু।
মুক্তার প্রতিষ্ঠানের নামও খাদিরানি। এ তরুণী জানালেন, এক বছর খাদি নিয়ে কাজ করছেন। আর এর মধ্যেই ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন, যা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। পণ্য ডেলিভারি দিতে হিমশিম খেতে হয়। মাসে প্রায় লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়।
মুক্তা আক্তার তাঁর উদ্যোগ শুরু করেন এক বছর আগে আর এ সময়ে তাঁর মোট বিক্রি ১৫ লাখ টাকার ওপর।
মুক্তার কথায় স্পষ্ট, উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের (উই) ফেসবুক গ্রুপ তাঁর জীবনকে বেশ প্রভাবিত করেছে। তিনি বলেন, ‘উই উদ্যোক্তা তৈরি করা এবং দেশি পণ্যের সেরা প্ল্যাটফর্ম। আমি টিউশন করে নিজের পড়ালেখার খরচ বহন করতাম, গ্রামে টিউশনের সম্মানী কম হওয়ার কারণে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়তে হতো। তার ওপর করোনায় দুটি টিউশন অফ হয়ে যায়। তখন খুব হতাশায় ভুগি। সে সময় আমি ফেসবুক গ্রুপ উই-কে পাই। তারপর উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছে জাগে, আস্তে আস্তে সফল উদ্যোক্তা। এখন এটাকে আমার পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছি এবং ধরে রাখব। কারণ, উদ্যোক্তা হলেই আমি আরও পাঁচ-সাত জন বা ১০ জনকে কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারব এবং উদ্যোক্তা মানে, নিজের বস নিজেই।’
মুক্তা কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। কম্পিউটার চালাতে জানেন। কল সেন্টার এজেন্ট কোর্স করেছেন। এখন সেলাই শিখছেন।
লাখপতি হতে পেরেছেন? উত্তরে মুক্তা বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমার ১৫ লাখ টাকা সেল হয়েছে। আর আমি আয়ের দিক থেকেও লাখপতি।’ এ সফল তরুণীর পরামর্শ, কিছু করার ইচ্ছে থাকলে লক্ষ্য ঠিক করে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে অনায়াসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। কোনো কাজকে ছোট করে দেখা যাবে না। পরিশ্রম আর নিষ্ঠা থাকলে সাফল্য ধরা দেবেই।